সিউল: গণমাধ্যমের সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ও সেনাবহিনী। উত্তর কোরিয়ার গোলা হামলার দুর্বল জবাবের কারণে দেশটির জনগণের মধ্যে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
উত্তর কোরিয়া হামলা চালানোর পর পরই দক্ষিণ কোরিয়া যেকোনো ধরনের যুদ্ধ এড়াতে চায় বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট লি মিয়াং-বাক মন্তব্য করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে প্রেসিডেন্টের মতাসীন রণশীল গ্র্যান্ড ন্যাশনাল দলের (জিএনপি) কিছু সদস্য এ মন্তব্যের ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানালে প্রেসিডেন্টের ব্লু হাউস থেকে ব্যক্তবটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
জিএনপি’র এক ুব্দ প্রতিনিধি হং সা-দুক বলেন, ‘ব্লু হাউসে যারা প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধ এড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছেন তাদের সম্পর্কে আমি কিছু বলতে চাই। এ ধরনের দুর্বল ভূমিকা অবলম্বনে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য তাদের সবাইকে বরখাস্ত করা উচিত। ’
দুকের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক জংঅং বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায়।
একইসঙ্গে সংবাদপত্রটির বৃহস্পতিবারের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বল তা-ই আমাদের মূল সমস্যা। ’
এদিকে উত্তর কোরিয়ার প্রথম হামলা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিক প্রশংসা পান লি। তবে উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয়বারের মত হামলা চালালে দক্ষিণ কোরীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং এর প্রতিশোধের জন্য সংবাদপত্রগুলো আহ্বান জানায়।
জিএনপি’র আইনজীবী চাং মি-কিয়াং প্রতিরা মন্ত্রী কিম তায়ে ইয়ংকে বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমাদের বিমান বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার করা এবং উত্তর কোরিয়ার কামানগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হলে তারা দ্বিতীয়বার আর আক্রমণ করতো না। ’
একইসঙ্গে উত্তরের হামলার জবাবে সেনাবাহিনীর মাত্র ৮০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ারও সমালোচনা করেন তিনি।
তবে এর জবাবে কিম বলেন, ‘যদি আমরা বিমান বাহিনীকে ব্যবহার করতাম তাহলে উত্তর কোরিয়া হয়তো দ্বিতীয় হামলাটি করতে ব্যর্থ হতো। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ একটি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতো। ’
গত আট মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত আন্তঃসীমান্ত সেনা সংকটের সম্মুখীন হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট।
একইসঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধ এড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার এ হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া নিয়ে সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বড় সমস্যার মুখোমুখি করেছে প্রেসিডেন্টকে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন কঠোর পদপে নিতে যাচ্ছেন লি।
এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের ভবন থেকে উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে অবস্থিত পাঁচটি দক্ষিণ কোরীয় দ্বীপে সেনা সংখ্যা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় দেশটি।
একইসঙ্গে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী তাদের বর্তমান ইতিবাচক অবস্থান পরিবর্তন করবে বলে এক মুখপাত্র জানান। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার উভয় কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি আক্রমণে বিরোধপূর্ণ ইয়োনপইয়ং দ্বীপে এ পর্যন্ত দুই নৌ সেনা ও দু’জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১০