ঢাকা, সোমবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

‘পাকিস্তান আগের চেয়ে বেশি অস্থিতিশীল হবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪১, এপ্রিল ২০, ২০১৩
‘পাকিস্তান আগের চেয়ে বেশি অস্থিতিশীল হবে’

ঢাকা: দেশে ফেরার পর থেকেই একের পর এক বিপত্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফ।

গত ফেব্রুয়ারিতে এক জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় জুতো নিক্ষেপের শিকার হয়েছিলেন তিনি।

ভাগ্যক্রমে জুতো নিক্ষেপকারী সঠিক জায়গা জুতোটি নিক্ষেপ করতে ব্যর্থ হন।

এর পর থেকে মোশাররফের ভাগ্য শনি আছড় পড়তে থাকে।

৮ এপ্রিল মোশাররফের দেশ ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সাবেক সামরিক শাসক যাতে পাকিস্তান ত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও নির্দেশ দেন আদালত।
এক সপ্তাহ আগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগের শুনানি শুরু করে।

মঙ্গলবার নির্বাচন ট্রাইবুন্যাল মোশাররফকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ‍অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করে। আর একদিন পর বৃহস্পতিবার মোশাররফের ওপর নেমে আসে গ্রেফতারি পরোয়ানা। এর আগে আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়।

গ্রেফতার এড়াতে আদালত থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ।

আসলে তিনি কি এসব অনুমান করেছিলেন যখন দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?

হয়ত ভেবেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে এক আলোচক জানান, গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনাসহ আইন চ্যালেঞ্জে মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিয়েছিলেন মোশাররফ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোশাররফ দেশে ফিরে শুধু তার নিজের সমস্যাই করেনি, সবার জন্যই সমস্যা তৈরি করেছেন।

সামরিক বাহিনীর ভেতরের বিশ্বস্ত সূত্র মতে, মোশাররফের দেশে ফেরার পক্ষে ছিল না সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। দেশে ফেরার এক মাস আগে তাকে সেনাবাহিনী থেকে শেষ বারের মতো সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল।

হয়ত সৌদি আরবের মতো দেশের আশ্বাস পেয়ে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোশাররফ। অতীতে পাকিস্তানের যুদ্ধবাজ শাসকদের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে সৌদি আরবের মতো দেশগুলো।

মোশাররফের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ গঠনের ব্যাপারে যে কয়েকজন নেতা অতি উৎসাহী তাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ১৯৯৯ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে নওয়াজ শরিফকে সরিয়েছিলেন মোশাররফ। নওয়াজকে সৌদি আরবে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করেছিলেন।

মোশাররফ দেশে ফেরার পর চুপ করে ছিলেন নওয়াজ শরিফ। আর এতে সন্দেহ বেড়ে যায়, সৌদি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্রের জন্য এটি বিশেষ করে স্পর্শকতার সময়। পাকিস্তান আগের চেয়ে আর অস্থিতিশলীতার দিকে যেতে পারে।

তত্ত্বাধায়ক সরকারের প্রধান কাজ হলো নির্বাচন দেওয়া।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর ওপর জঙ্গি হামলার কারণে আগামী ১১ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন হওয়া নিয়ে প্রশ্নের দেখা দিয়েছে।

তত্ত্বাধায়ক সরকার হয়ে কিভাবে সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা বা বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনে বিচার করার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে হাত দিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।