ঢাকা: পরমাণু অস্ত্র বিলোপকরণের শর্তকে নাকচ করে দেওয়ার পরেই দুটি স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদ সংস্থা এ দাবি করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও তার মিত্র দেশগুলোর আশঙ্কা করছে, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা গেছে, উত্তর কোরিয়ার বাহিনী স্বল্পপাল্লঅর স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য দক্ষিণ হামগিওং প্রদেশে দুটি বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার নিয়ে যাচ্ছে।
ওই সূত্র জানায়, সামরিক বাহিনী গভীরভাবে উত্তরের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সর্বশেষ প্রস্তুতির ওপর নজর রাখছে। ”
ইয়োনহাপের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এপ্রিলের শুরুতে দক্ষিণ হামগিওং প্রদেশে মাঝারি পাল্লার মুসুদান ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সাতটি বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বসানো হয়।
উত্তর কোরিয়ার শক্তির প্রদর্শন হতে পারে দেশটির সেনবাহিনীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী দিবস ২৫ এপ্রিলে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তিনি এ সংবাদটিকে নিশ্চিত করতে পারছেন না। উত্তর কোরিয়ায় অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের কোনো নমুনা নেই। উত্তর কোরিয়া বৈধভাবে নিজের সমুদ্র সীমার পূর্ব উপকুলে নিয়মিত স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়।
গত ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রকেট উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রযুক্তির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এ উৎক্ষেপণ চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। গত ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি ভেঙ্গে তৃতীয়বারের মতো পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় দেশটি। এরপর থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। জাতিসংঘ নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উত্তর কোরিয়ার ওপর।
আলোচনা বসতে নিজ থেকে বৃহস্পতিবার আগ্রহ প্রকাশ করে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রটি। তবে দুটি শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাদের মিত্র দেশগুলোকে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর শর্ত মেনে নিতে নারাজ।
শর্ত দুটি ছিল-উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে জাতিসংঘকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার বন্ধ করতে হবে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার কাছে সোজা-সাপটা ইঙ্গিত চায় যে তারা (উত্তর কোরিয়া) পরমাণু অস্ত্রের কার্যক্রমে ইতি টানবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবির প্রেক্ষিতে জবাবে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পত্রিকা রোদোং সিনমুন এক মন্তব্য প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার আগে (কোরীয়) উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের ভাবা উচিত নয়। ”
পত্রিকাটি লিখেছে, “ ডিপিআরকে ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা হতে পারে কিন্তু পরমাণু অস্ত্র বিলোপ নিয়ে নয়। ” উত্তর কোরিয়ার সরকারি নাম ডেমোক্রেটিক পিপল’স রিপাবলিক অব কোরিয়া (ডিপিআরকে)।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com