ঢাকা: মানুব ইতিহাসের প্রথমবারের মতো বায়ুমন্ডলে চরমভাবে বেড়ে গেছে কার্বন-ডাইঅক্সাইড। আর এই বেড়ে যাওয়ার মাত্রা হচ্ছে প্রতি ১০ লাখে ৪শ শতাংশ।
বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিমাপের যন্ত্র আবিষ্কারের ৫৫ বছর পর এবং পৃথিবীর ৩০ লাখ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এতো ভয়াবহ মাত্রায় বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতির বিষয়টি জানা গেল।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের মৌনা লোয়ার কাছে একটি গবেষণাগারে পরীক্ষা করে বিষয়টি জানা গেছে। ১৭ শতককে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ছিল প্রতি ২৭০ থেকে ২৮০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন)। মানুষের তৈরি কার্বন-ডাইঅক্সাইডের কারণে এ মাত্রা ৪৩ শতাংশ বেড়ে আজকের অবস্থায় উপনীত হয়ে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার তথ্যটি মানুষকে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সতর্ক করে তুলবে।
লন্ডনের স্কুল অব ইকোনোমিক্স এ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের গ্রান্থাম রিচার্স ইন্সটিটিউ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ এ্যান্ড দ্য এনভারনমেন্টের নীতি ও যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক বব ওয়ার্ড বলেন, লাখ লাখ বছর ধরে পৃথিবীতে কার্বন ডাই অক্সাইডের এমন মাত্রা ছিল না।
ওয়ার্ড বলেন, “আমরা প্রাগৈতিহাসিক জলবায়ু তৈরি করছি যেখানে মানব সমাজ ভয়াবহ এবং সম্ভাব্য বিপর্যয়ের ঝুঁকির মুখোমুখি হবে। ”
তিনি জানান, এমন পরিস্থিতিতে থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় একটি। জরুরি ভিত্তিতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বায়ুমন্ডলে বিদ্যমান কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রাতিরিক্ততার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের রয়াল সোসাইটির আবহাওয়া পরিবর্তন বিভাগের প্রধান প্রফেসর স্যার ব্রায়েন হস্কিন বলেন, “এই মাত্রা সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করার কথা। এই অবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে এমন অনেক কিছুই হচ্ছে যা হতাশার নয়। যেমন চায়না এই পরিপ্রেক্ষিতে অনেক করছে। সাম্প্রতিক পাঁচ বছরের তাদের পরিকল্পনা সত্যিই অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে”।
কিন্তু বিবিসি পরিবেশ বিশ্লেষণকারী রজার হ্যাররাবিন বলেছেন, “ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এই প্রসঙ্গটি এঁড়িয়ে যাচ্ছে এবং শিল্প কারখানাগুলোও কমদামী জীবাশ্ম জ়্বালানির প্রতি ঝুঁকে যাচ্ছে। ”
উল্লেখ্য, চীনের পরিকল্পনা রয়েছে, আবহাওয়ার এই পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০১১-২০১৫ সাল নাগাদ ৩০ বছরের ক্রমোন্নতিতে হওয়া ক্ষতিগুলো পূরণ করা এবং নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৩
সম্পাদনা: বুশরা ফারিজমা হুসাইন ও শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com