ঢাকা: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে নিজের নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন) জয়ী হওয়ার পথে রয়েছে। পার্লামেন্টের সরাসরি নির্বাচনের ২৭২টি আসনের ২৩৪টি আসনের প্রকাশিত ফলাফলে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ ও পাকিস্তান পিপল’স পার্টির (পিপিপি) চেয়ে তিনগুণ আসন বেশি পেয়েছে পিএমএল-এন।
বাংলাদেশ সময় ৬টার দিকে, ২৩৪টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করে পাকিস্তানের একটি সংবাদ মাধ্যম। প্রকাশিত ওই আংশিক ফলাফলে দেখা যায়, ১০৭টি আসনে জয় পেয়েছে পিএমএল-এন। আর ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পেয়েছে ৩২টি, বিদায়ী ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ২৮টি আসন, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) ১২টি ও পাকিস্তান মিল্লি আওয়ামী পার্টি ৯টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২৫টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে দুটি, একটি করে আসন।
আর মাত্র ৩৮টি আসনের ফল প্রকাশ বাকি।
এদিকে নিজের বিজয়ের সম্ভাবনা দেখে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন নওয়াজ শরিফ। এককভাবে সরকার গঠন করতে ১৭২টি আসনে জয় না পেলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতেই এ বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ইমরানের দল পিটিআই বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকতে প্রস্তুত রয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতা আসাদ ওমর জানিয়েছেন, সার্বিকভাবে দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতীয় দল হিসেবে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে পিটিআইয়ের, জাতীয় সংসদে (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) শক্তিশালী এবং সক্রিয় বিরোধী ভূমিকার রাখতে সক্ষম পিটিআই। ”
পাঞ্জাবে আশানুরূপ ফল না পেলেও হতাশ হননি আসাদ ওমর। জাতীয় রাজনীতিতে দলের ভবিষ্যতের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি।
শনিবার পাকিস্তান ইতিহাসের পাতায় নাম লেখায়। প্রথমবারের মতো দেশটিতে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা নিতে যাচ্ছে।
শনিবার দেশের ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে পাকিস্তানের আট কোটি ৬০ লাখের বেশি ভোটারের ৬০ শতাংশ ভোট দিয়েছে বলে রোববার জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্যে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। তালেবানের হামলার হুমকি উপেক্ষা করে পাকিস্তানিরা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে ভোট দেন।
তবে করাচিতে সুষ্ঠ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। করাচিতে জামায়াতে ইসলামি, সুন্নি তেহরিক, জামিয়াত উলামা-ই-পাকিস্তান, সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল ও মুহাজির কওমি মুভমেন্ট নির্বাচন বর্জন করেছে।
অনিয়ম আর জালিয়াতির অভিযোগ এনে দলগুলো নির্বাচন বর্জন করে। মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের (এমকিউএম) বিরুদ্ধে সহিংসতা সৃষ্টি আর ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছে জামায়াতে ইসলামি। পাকিস্তান জুড়ে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হলেও করাচিতে ভোট গ্রহণ চলে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
নির্বাচন বর্জনকারী পাঁচটি দলের সঙ্গে পিএমএল-এন, পিটিআই, পিপিপির মতো রাজনীতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করেছে। দলগুলোর দাবি, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন।
দেশের ভেতর সমালোচনার মুখে পড়লেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানের নির্বাচনের প্রশংসা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com