ঢাকা, শনিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন আসছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৩, মে ১৩, ২০১৩
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন আসছে

ঢাকা: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পাওয়ায় তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন নওয়াজ শরিফ। ঐতিহাসিক নির্বাচনে জয় পেয়ে সরকারের বসে প্রথম যে কাজগুলো হাতে নেবে নওয়াজের সরকার সেগুলোর মধ্যে পররাষ্ট্র সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা।



যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব ধরনের ‘গোপন আর উন্মুক্ত’ চুক্তিসহ পররাষ্ট্র নীতি পুনরায় ঠিক করবে পিএমএল-এন নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। পাকিস্তানের একটি সংবাদ মাধ্যমে একান্ত সাক্ষাৎকারে নওয়াজের ঘনিষ্ট এক নেতা জানিয়েছে।

নওয়াজের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক ওই উপদেষ্টা জানান, ‘সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থ’কে অগ্রাধিকার দিয়ে পিএমএল-এন পররাষ্ট্র নীতির ওপর গুরুত্ব দেবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “এটি সস্তা শোনালেও আমরা এটিই বোঝাচ্ছি। ”

আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে সহযোগিতা করার চুক্তিসহ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়গুলো পিএমএল-এন পুনরায় বিবেচনা করবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এ ধরনের সময় বিষয় আমরা দেখব সেগুলো আমাদের দেশের জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কিনা। ”

তবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কাঁট করার মতো অবস্থানে যাবে না পিএমএল-এন। ১৯৯৮ সালে ক্ষমতায় থাকার সময় মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নওয়াজের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে ওই নেতা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি না করেই আমাদের পররাষ্ট্র নীতি পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষা করবে। ”

পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে ড্রোন হামলা বন্ধে পিএমএল-এন সরকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “এ ধরনের হামলাকে আমরা আমাদের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও স্বার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হিসেবে দেখি। ”

নির্বাচনের আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নওয়াজ শরিফ বলেছিলেন, উপজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ড্রোন হামলার মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করবেন তিনি।

তেহরানের সঙ্গে ইসলামাবাদের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত নওয়াজের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হওয়ার কারণে ইরান থেকে পাইপলাইনে করে প্রাকৃতিক গ্যাস আনার পাকিস্তানের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সৌদি আরব। পিপিপির নেতৃত্বাধীন বিদায়ী সরকার এসব চাপ উপেক্ষা করে ক্ষমতা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে এ পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

এ বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করবে নওয়াজের সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে দেশীয় স্বার্থই প্রাধান্য পাবে। যদি দেশের উপকারেরই এ পরিকল্পনা নেওয়া হয় তাহলে তা এগিয়ে নেবে পিএমএল-এন সরকার।

১৯৯৮ সালে ভারতের সঙ্গে যেখানে সম্পর্কের ইতি ঘটেছিল সেখানে থেকেই ফের শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন নওয়াজের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্ঠা।

এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নওয়াজ শরিফ বলেছেন, “আমাদের যাত্রা পুনরায় (১৯৯৯ সাল থেকে) শুরু করতে হবে। ভারত আমাকে আমন্ত্রণ করুক আর না করুক আমি ভারত সফর করব। ”

নির্বাচনী প্রচারণাকালে এবং নির্বাচনের আগে নওয়াজ শরিফ দৃঢ়ভাবে ১৯৯৯ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপায়ী সঙ্গে যে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন তা পুনরুজ্জীবিত করার ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।