ঢাকা: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএলএন) জয় পাওয়ায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরিরা আশাবাদী হয়েছেন যে, দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে কাজ করবেন তিনি। ইতোমধ্যে নওয়াজকে বিজয় শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
নওয়াজের বিজয়ে মুক্তিপন্থি ও ভারতপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো খুশি হয়েছেন। তাদের আশা, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উদ্যোগ নেবেন তিনি।
কাশ্মীরের সংবাদ মাধ্যম কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস (কেএমএস) জানিয়েছে, আবদুল্লাহ পাত্তানে একটি জনসভায় নওয়াজকে স্মরণ করে দিয়েছেন, গত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময় কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “আমার দল ও জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের পক্ষ থেকে আমি নওয়াজকে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বিশাল জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আমরা আশা ও দোয়া করি, পাকিস্তানের নেতৃত্বের পরিবর্তন ভারত ও পাকিস্তানের ভালো সম্পর্কের পথ তৈরি করবে। ”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নওয়াজ শরিফকে সহযোগিতার করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আবদুল্লাহ। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে অতীতে নেওয়া ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে আলোচনা শুরু করার জন্য মনমোহনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কেএমএস আরও জানায়, সর্বদলীয় হুরিয়াত সম্মেলনের চেয়ারম্যান মিরওয়েজ উমর ফারুক পাকিস্তানিদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, হুমকি উপক্ষে করে ভোট দেওয়ার জন্য। তার আশা, কাশ্মীরিদের চাওয়া কাশ্মীর সমস্যার বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানে ব্যবস্থা নিতে কাজ করবে নওয়াজ।
হুরিয়াত নেতা সৈয়দ আলি গিলানি বলেন, পাকিস্তানের উচিত কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নে ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। জাতিসংঘের প্রস্তাবে জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। ওই বছরের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ আগস্ট ভারত নামে দু’টি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এ সময় কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে অঙ্গীভূত ছিল না কাশ্মীর। ব্রিটিশরা কাশ্মীরকে অধিকার দেয়, পাকিস্তান না ভারতের সঙ্গে যোগ দেবে বা স্বাধীন থাকবে সেটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার।
মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরের শাসক ছিলেন মহারাজা হরি সিং। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পশ্চিম কাশ্মীরের মুসলমানরা এবং দের এলাকার পাকিস্তানি উপজাতিরা হরি সিংহের শাসন থেকে কাশ্মীরকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন। বিদ্রোহ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে ভারতের সঙ্গে সমঝোতা করেন মহারাজা হরি সিং। তখন থেকেই কাশ্মীর নিয়ে সমস্যা চলে আসছে। কাশ্মীর নিয়েই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com