ঢাকা, শনিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

সন্তান যখন পাসওয়ার্ড চোর!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৩৬, মে ২১, ২০১৩
সন্তান যখন পাসওয়ার্ড চোর!

ঢাকা: সন্তানদের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে অনেক মা-বাবা তাদের ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট বা পিসিতে দিয়ে রাখেন পাসওয়ার্ড। শুধু তাই নয়, নিয়মিত বিরতিতে পরিবর্তন করেন এসব পাসওয়ার্ড।

কিন্তু তাতেও রেহাই হয় না।
 
সন্তানরা খুঁজে বের করে মা-বাবার দেওয়া পাসওয়ার্ডটি। প্রতি ১০ জনের আট জন এমন কাজ করে বলে একটি গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছে।

৫ থেকে শুরু করে ১৮ বছর বয়সী দুই হাজার জনের ওপর গবেষণাটি চালিয়েছে ভার্চুয়াল পিগগি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। অর্থের বিনিময়ে শিশুদের সেবাদানকারী ভার্চুয়াল পিগগির গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, ১৮ শতাংশ সন্তান ছিঁচকে চোরের মতো মা-বাবার ঘাড়ের ওপর দিয়ে পাসওয়ার্ডটি দেখতে চেষ্টা করে।

মা-বাবার অনলাইন অ্যাকাউন্টটি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত ১২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংখ্যার সম্মেলন ঘটনায় পাসওয়ার্ডটি উদ্ধার করার জন্য। সন্তানদের এমন কাজে অনেকের অ্যাকাউন্ট বন্ধও হয়ে গেছে।

সন্তানদের এই কাজের জন্য মা-বাবার ক্রেডিট কার্ড ও অনলাইন ব্যয় বেড়ে যায়। দেখা গেছে, প্রতি চারজন শিশুর একজন মা-বাবার ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু আইটিউন, পেপাল বা মা-বাবার ডেবিক ও ক্রেডিট কার্ডের ব্যয় করেছে গড়ে ৩৩.২৩ পাউন্ড।

তাদের মধ্যে আবার ৬ শতাংশ সন্তানের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যয় ঠিক থেকেছে। প্রতি পাঁচজনের একজন বলেছে, পাসওয়ার্ড চুরি করার বিষয়টি মা-বাবারা জানে না।

গবেষণায় বেরিয়ে আসা আশ্চর্যজনক তথ্য হলো-যুক্তরাজ্যে কোনো শিশুর বয়স ৬ এর কোঠায় পৌঁছলে সে মা-বাবার ল্যাপটপ, পসি ও ট্যাবলেট ব্যবহার করে।

গবেষণায় ৪৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানায়, তাদের নিজস্ব কম্পিউটার রয়েছে। তাদের বয়স যখন আট তখনই তারা কম্পিউটার হাতে পেয়েছে।

কিন্ত যারা ওই বয়সে নিজের কম্পিউটার পায়নি তাদের প্রতি ১০ জনের চারজন মায়ের ল্যাপটপেই ব্যবহার করেছে। আর ২৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী তাদের বাবার ল্যাপটপ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

শিশুরা স্বীকার করেন, গেম সাইট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর পরেই ইউটিউবে বেশি করে ঢু মারে তারা।
৩০ শতাংশ বলেছে, মা-বাব যখন কাজে ব্যস্ত থাকে তখন তারা ইন্টারনেটে বিচরণ করে।

ইন্টারনেট ব্যবহার বা বিশেষ কিছু সাইট ভিজিট করার জন্য মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের যুক্তি-তর্কও হয়। জরিপে অংশ নেওয়াদের ২৭ শতাংশের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে।

স্ক্রিনের সামনে সময় ব্যয় করার জন্য মা-বাবার বুকনি খেয়েছে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৮ শতাংশ। দেখা গেছে, ইন্টারনেট ব্যবহারে সপ্তাহে গড়ে ৬ ঘণ্টা ২১ মিনিট ব্যয় করে তারা।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ক্লেইর পেরি বলেন, “এই জরিপ নিশ্চিতভাবে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে যে খুব কম মা-বাবাই তাদের শিশুদের অনলাইনে বিচরণ নিয়ে সতর্ক থাকেন। ”

অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে আন্দোলনকারী আরও বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদে রাখা সন্তান ও প্রাপ্ত বয়স্ক উভয়ের জন্য গুরুত্বপুর্ণ শিক্ষ‍ার বিষয়। ”

প্রযুক্তির সাম্প্রতিক বিস্ফোরণে কারণে কড়াকড়ি করা পিতামাতা জন্য কঠিন কিন্তু আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে অনলাইনে শিশুরা নিরাপদ ও দায়িত্বশীল রাখার জন্য। এ ক্ষেত্রে পিতা-মাতাদের বড় ভূমিকা পালন করা উচিত। ”

ভার্চুয়াল পিগগির এক মুখপাত্র জানান, ব্রিটিশ শিশুরা চরমভাবে প্রযুক্তিপ্রেমি। ছয় বা সাত বছরের একটি শিশুর বেশি সময় লাগে একটি ট্যাবলেট, ফোন বা পিসির পাসওয়ার্ড উদ্ধার করতে। তাই মা-বাবাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।