ঢাকা: বাংলাদেশের মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের বোঝা কমানোর সুযোগ চাইছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। প্রত্যাশিত শিল্প কারখানা গড়ে না ওঠায় পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা তেমন জোরালো নয়।
পুরো উৎপাদন কেনার মতো পর্যাপ্ত গ্রাহক না থাকায় এবং উৎপাদনক্ষমতার অপচয়ে এ খাতে রাজ্যের লোকসানও বাড়ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির সুযোগ পেয়ে নিজেদের উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের একটা গতি করার জন্য এখন মরিয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনার সিদ্ধান্তই উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের ব্যাপারে নড়েচড়ে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদ্যুৎ রফতানির চুক্তি সই করে গিয়েছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ভারতের কাছ থেকে মোট ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এরমধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট জোগাবে এনটিপিসি। বাকি ২৫০ মেগাওয়াট বাংলাদেশ পছন্দমতো যে কোনও সংস্থার কাছ থেকে কিনতে পারবে— এমনই ছিল সিদ্ধান্ত।
ভারতীয় বিভিন্ন বিদ্যুৎসংস্থার কাছে বাংলাদেশ এ মর্মে প্রস্তাব চেয়ে আবেদন (রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজাল) পাঠিয়েছে। ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত পুরো প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থ্যতা করবে কেন্দ্রীয় দুই নিগম এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগম (এনভিভিএন) এবং পাওয়ার ট্রেডিং কর্পোরেশন (পিটিসি)। রফতানিতে আগ্রহী ভারতীয় সংস্থাগুলিকে এদের মাধ্যমেই ঢাকার কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ দফতরের ধারণা, বিভিন্ন রাজ্যের অন্যান্য বিদ্যুৎসংস্থাগুলোও এই রফতানির সুযোগ পেতে চাইবে। ফলে উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের রফতানিকরণের প্রক্রিয়া খুব সহজ হবে না বলে আশঙ্কা রাজ্যটির বিদ্যুৎ দফতরের। তবে খুব সহজে এ রফতানির সুযোগ হাতছাড়াও হতে দেবে না তারা— এমনই জানা গেছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা সূত্রে।
এদিকে চুক্তি অনুযায়ী ২০১৩ সালের মধ্যে সীমান্তের দু’দিকে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণ শেষ হবে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হলে শুরু হয়ে গেছে বরাত দেওয়ার তোড়জোড়।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক বিদ্যুৎ কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্য এনভিভিএন এবং পিটিসি মারফত প্রস্তাব পাঠাতে। ” তাঁর দাবি, প্রস্তাব গৃহীত হলে টানা তিন বছর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির সুযোগ মিলবে। তাতে উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের সদ্ব্যবহারের সুবাদে বাড়তি আয়ের রাস্তা খুলবে রাজ্যের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৩
সম্পাদনা: তানিম কবির ও রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর