নয়াদিল্লি : শুধু খবরই নয়, সম্পাদকীয়ও লিখছে পথশিশুরা। ভাবতে পারেন? শিশুবিবাহ, পুলিশের অত্যাচার এ সব নিয়ে কলম ধরেছে রাস্তার শিশুরা।
গত ১০ বছর ধরে ‘বালকনামা’ সংবাদপত্র কাজ করে চলেছে কাগজকুড়ানির দল। ওদের টাকায় চলছে একটা আস্ত কাগজ। শুরুতে সাকুল্যে ৩৫ পথশিশু ছিল। তাদের নিয়েই যাত্রা শুরু করে অভিনব এই সংবাদপত্রটি। এখন এই কাগজের সদস্য সংখ্যা ১০ হাজার।
কেউ থাকে ঝুপড়িতে। কেউ ব্রিজের তলায়। কারোর মাথার ছাদ বলতে পলিথিনের আস্তরণ। ওরা সব পথশিশু। কেউ বাড়িতে কাজ করে। কেউ ছোটখাট দোকানে। কেউ কাগজ কুড়োয়।
ওদেরই একজন জ্যোতি। থাকে নয়াদিল্লি বাসস্টপের ব্রিজের তলায়। সকালটা কাগজ কুড়িয়ে চললেও দিনের একটা সময় কিন্তু সে জানপ্রাণ ঢেলে দেয় রিপোর্ট লেখায়। জ্যোতি জার্নালিস্ট। ‘বালকনামা’র জন্য সে সাংবাদিকতা করে। লেখে। ২০১২’য় জ্যোতির ছবি বেরিয়েছিল।
তখন থেকেই ওর মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সবচেয়ে যেটা অবাক করার মতো, কী কী খবর কাগজে যাবে, সম্পাদকীয়র ফোকাস কী হবে সব ঠিক করে রাস্তার শিশুরা। লেখা থেকে এডিটিং সব।
আসলে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রটিকে একেবারে নিজেদের বলেই ওরা ভাবে। ওদের নিয়ে খবরই- এই সংবাদপত্রের মূল ফোকাস। যারা এখনও লিখতে জানে না, সিনিয়ররা তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে লেখে। রিপোর্টিংয়ে ওদের নিজেদের কথাও থাকে। পথশিশুরা যাতে কাগজটি পড়তে আগ্রহী হয় সে জন্য তাদের নিয়ে সাক্ষাৎ থাকে কাগজে।
পয়সা পায় না। পয়সা দেয়। হ্যাঁ, ওদের কাছ থেকে মাসে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হয়। আর এই টাকায় কাগজ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ওদের পড়াশোনাও শেখানো হয়। কলমের জোর যে রয়েছে- প্রমাণ করেছে এই পথশিশুরা। তা বুঝিয়ে দিচ্ছে গত ১০ বছর ধরে কাগজটি প্রকাশিত হওয়া।
বাংলাদেশ সময় : ১৮১৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৩
এসপি/ সম্পাদনা: এসএস