ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ওবামার চাপ: সিনেটে ইমিগ্রেশন বিলে বিতর্ক শুরু

স্পেশাল করেসেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:৪৫, জুন ১২, ২০১৩
ওবামার চাপ: সিনেটে ইমিগ্রেশন বিলে বিতর্ক শুরু

নিউইয়র্ক: নতুন ইমিগ্রেশন বিলে ভোটাভুটির জন্য মার্কিন সিনেটে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সিনেটররা মঙ্গলবার এই বিতর্ক শুরু করেন।

এদিকে বিলের পক্ষে ভোট পেতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ভোটাভুটি শুরু আগে তিনি বলেছেন, “গ্রীস্ম শেষ হওয়ার আগেই কংগ্রেসে বিলটি পাস হয়ে না যাওয়ার কোনো কারণই দেখছি না। ”

হোয়াইট হাউসে দেওয়া ভাষণে সিনেটরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যদি সত্যিই ইমিগ্রেশন পদ্ধতিতে একটি কাঠামো আনতে চান তাহলে তার সঠিক পথই হচ্ছে এই বিল। আর যদি আপনারা বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিতে চান, যদি আপনারা মনে করেন একটি ভাঙ্গাচোরা পদ্ধতিতেই আমেরিকা এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে, তাহলেই কেবল আমি মনে করি এই বিলটি আটকে দেওয়া যেতে পারে। ”
দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা থেকে বিলটিতে রিপাবলিকানদেরও সায় আছে। শেষ মূহূর্তের কোনো কথায় তারা ফের বেঁকে না বসে সেই চিন্তা থেকে বেশ সতর্কতার সঙ্গেই কথা বলছিলেন বারাক ওবামা। তবে বিতর্কটি একটি জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।

হোয়াইট হাউজের ইস্ট রুমে বসে যখন কথা বলছিলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামাকে তখন ঘিরে ছিলেন ইমিগ্রেশন আইনের প্রস্তাবকারীরা। আরও ওছলেন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ি ও শ্রমিক নেতা এবং একদল তরুণ কিংবা যুবক যারা এই ইমিগ্রেশন বিল পাশের সবচেয়ে বড় সুবিধাটি পাবে। এই বিল পাশ হলে শিশু বয়সে যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে এখানেই বড় হয়েছে, লেখাপড়া শিখেছে তারা তাদের স্থায়ী বসবাসের নিশ্চয়তা পাবে।

“এই বিলটি সঠিক তা বলবো না... এটি ¯্রফে একটি আপোস। আর সামনের দিকে যেতে হলে কেউই যা চায় তা পুরোপুরি পায় না। ডেমোক্র্যাটরাও না, রিপাবলিকানরাও না। আমিও পাইনি,” বলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা।

এদিকে মঙ্গলবার সকালেই সিনেটের স্পিকার ওহাইওর রিপাবলিকান জন এ বোয়েনার এক টেলিভিশন বিতর্কে বলেছেন, তার আশঙ্কা এই বিলটি নিয়ে খুব একটা এগোনো যাবে না।

এবিসি টেলিভিশনের গুড মর্নিং আমেরিকায় হাজির হয়ে জন বোয়েনার বলেন, সিনেটে উত্থাপিত বিলটি নিয়ে সত্যিই উদ্বেগে রয়েছেন তিনি। বিশেষ করে সীমান্ত নিরাপত্তা ও আইনের অভ্যন্তরীণ প্রয়োগের বিষয়ে তার এই উদ্বেগ।
বোয়েনারের এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিনেট, ইমিগ্রেশন নিয়ে বিতর্ক শুরুর পক্ষে ভোট দেয়।

মঙ্গলবার সকালে এই বিতর্ক শুরু হলে কেন্টাকির সিনেটর ও রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককোনেল বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন জাতির জন্য ইমিগ্রেশন পদ্ধতি নির্ধারণ করার প্রয়োজন রয়েছে। আর সেকারণেই বিলটি ফ্লোরে ওঠার বিষয়ে তার কোনো আপত্তি নেই।

দেশের প্রচলিত ইমিগ্রেশন পদ্ধতিটি কাজ করছে বলে মনে করছেন, এমন এক জনেরও দেখা আমি পাইনি, বলেন ম্যাককোনেল। এবং আমার দলের একজন নির্বাচিত নেতা হিসেবে আমি মনে করি, আমাদের পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করা উচিত। ”

মি. ম্যাককোনেল এও বলেন, যেহেতু বিলটি উভয় পক্ষের সিনেটরদের নিয়ে গঠিত ৮ জনের একটি দল তৈরি করেছে সুতরাং আমি এটি নিয়ে বিতর্ক করার যথেষ্টই সুযোগ দেখি, তবে এও মনে করি বিলটি আরও জোরালো হওয়া প্রয়োজন।
“গ্যাং অব এইট আর নয়, এখন সময় হয়েছে সিনেটের গ্যাং অব হান্ড্রেডকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করারা। আমাদের পুরো সিনেট মিলে কাজ করতে হবে, দেখা যাক আমরা বিষয়টির কিছুটা উন্নতি করতে পারি কি না, বলেন ম্যাককোনেল।
সিনেটরদের মন পেতে ওবামা তার বক্তৃতায়ও সীমান্ত নিরাপত্তার কথা বলেন। তিনি বলেন, এই বিলে আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর সীমান্ত নিরাপত্তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ”

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে অবৈধ প্রবেশ বন্ধ হবে। তবে প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে যারা ঢুকে পড়েছেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ কি হবে সে বিষয়েও জোর দেন।
তিনি বলেন, একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তারা নাগরিকত্ব পাবে। তারা ট্যাক্স দেবে একই সঙ্গে জরিমানাও পরিশোধ করবে, সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষিত হবে এবং তার পরেই তারা কেবল আমেরিকান নাগরিকের মর্যাদা পাবে। এবং এটা কেবল তারাই পাবেন যারা বৈধ পথে আমেরিকায় এসে থেকে গেছেন। আর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতেও তাদের লেগে যাবে ১৩ বছর।

তিনি বলেন, জটিল ও দীর্ঘ হলেও এটিই একমাত্র পথ যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে সকল মানুষ একই রীতি পদ্ধতির আওতায় থাকবে।

ওবামার সঙ্গে এসময় আরও ছিলেন ইউএস চেম্বার অব কমার্স এর প্রেসিডেন্ট থমাস জে ডোনোহিউ, স্যান এন্টোনিওর মেয়র জুলিয়ান ক্যাস্ট্রো, আমেরিকা অনলাইনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ কেস, নিউইয়র্কের সাবেক পুলিশ প্রধান উইলিয়ম জে ব্রাটন, এএফএল-সিআইও’র প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ট্রুমকা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৪০৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৩
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।