ঢাকা: সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দুই বছর পেরিয়েছে গত মার্চে। যুদ্ধের অবসানের কোনো নমুনা এখনও দেখা যাচ্ছে না।
সিরিয়ার সরকার পক্ষও যেমন ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়, তেমনি বিরোধীরাও। আন্তর্জাতিক চাপ, হুমকি-ধামকি কিছুই কাজে দিচ্ছে না প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাকে নামাতে।
কিন্তু শরীরে শেষ বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত যুদ্ধের মাঠ থেকে পিঁছু হটতে নারাজ। এমনই এক যোদ্ধা আবু ওমর আবদুল্লাহ। তিনি তরুণ নন, একজন ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ।
বাশারের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে যে কয়েকটি বিদ্রোহী সংগঠন লড়ছে তাদের একটি ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ)। ওমর আবদুল্লাহ এ সংগঠনেরই এক যোদ্ধা।
অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন বাশার আল-আসাদ সরকারের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতেই।
তিনি বলেন, “আগে আমরা নিপীড়িত ছিলাম, কিন্তু এখন আমরা কথা বলতে পারি। ”
“এ দেশে কেউ শিকার করার বন্দুকও বহন করার সাহস পেত না কিন্তু আমি এটা করছি এবং আমি তোমার বিরুদ্ধে লড়ছি বাশার আল-আসাদ। আমার বয়স ৬৫। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি তোমার বিরুদ্ধে লড়ব”-দৃঢ় প্রত্যয়ীয় ওমর আবদুল্লাহর প্রতিশ্রুতি।
কিভাবে নিজেকে যুদ্ধে জড়ালেন তার কারণও ব্যাখা করেছেন এই বৃদ্ধ যোদ্ধা। তিনি জানান, একদিন তার জীবিকা নির্বাহের দোকানটি গুঁড়িয়ে দেয় সরকারি বাহিনী। ৫০ জনের সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৩০ জনকে হত্যা করে বাশারবাহিনী।
সিরীয় সেনাবাহিনীর সাবেক সৈন্য ওমর আবদুল্লাহ’র অভিযোগ বাশারের বাবা ক্ষমতায় থাকাকালে ইসরায়েলের কাছে দেশের জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধের সময় সিরিয়া ও মিশরের সেনাবাহিনী ইসরায়েলের দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করে। কিন্তু বাশারের বাবা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদ ৬৩টি গ্রাম ইসরায়েলের কাছে বিক্রি করে দেয়।
ওই যুদ্ধে নিজেও অংশ নিয়েছিলেন ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “আমি উত্তরাঞ্চলীয় শাখায় ছিলাম, আমাদের সাঁজোয়া যান তাবারিয়ায় পৌঁছেছিল। ”
সিরিয়ার দক্ষিণে ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চল ও গোলান মালভূমির মাঝে তারারিয়া হ্রদ অবস্থিত।
২০১১ সালের মার্চে বাশার আল-আসাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করে সিরিয়ার একাংশ জনগণ। সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় সংখ্যা লঘু শিয়া আসাদ পরিবার চার দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। বাবা হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বাশার আল আসাদ। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় ছিলেন হাফিজ।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্ট, জুন ১৭, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com