কলকাতা: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হলেও কর্কট অর্থাৎ ক্যান্সারের মতো ঘাতক ব্যাধিকে সমূলে উচ্ছেদ করা যায়নি। ক্যান্সারের প্রকোপে এখনও বিশ্বে প্রাণ হারাচ্ছেন কোটি মানুষ।
তবে বর্তমানে সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সৌজন্যে কোটি কোটি মানুষ নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছেন। তাই ক্যান্সারকে এখন ঠিক প্রাণঘাতী রোগ বলা যায় না। যদিও এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
পৃথিবীর মানুষ এই রোগের সঠিক চিকিৎসার জন্য পশ্চিমা দেশের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে এ ব্যাপারে আমেরিকা ও ব্রিটেনকে কয়েক ধাপ সামনে রাখেন ভুক্তভোগীরা।
আবার কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম চিত্রও ধরা পড়ে। পশ্চিমা দেশের চিকিৎসার ওপর আস্থা হারিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানুষ সাত সমুদ্র ১৩ নদী পেরিয়ে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছেন।
কলকাতার ঠাকুরপুকুর কিংবা নিউটাউনের টাটা মেডিকেল সেন্টারের পাশাপাশি এ ব্যাপারে বিশেষভাবে লেকটাউনের ক্রিটিক্যাল ক্যান্সার ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকের নাম উল্লেখযোগ্য।
মার্কিন নাগরিক মলি রাপুর (৫৫) পেশায় একজন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার, তিনি ইউনিয়ন প্যাসিফিক রেল রোডের একজন বাসিন্দা। ২০০৮ সালে তার ওভারিয়ান ক্যান্সার ধরা পড়ে। আমেরিকার বিখ্যাত ক্যান্সার হসপিটাল এমডি অ্যান্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারে তার চিকিৎসা হয় একটানা পাঁচ বছর।
২০০৯ সালে তার ডিম্বাশয়ে একটি অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা কোনও আশাজনক ফল না পেয়ে কেমোথেরাপি শুরু করেন। কিন্তু তিনবার কেমো দেওয়ার পরও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি বরং অবনতি হয়েছে।
মার্কিন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা চতুর্থবার কেমোথেরাপির পরামর্শ দিলেও মলি রাপুরের স্বামী প্রবীর রাপুর ইন্টারনেটে ক্যান্সার চিকিৎসার নিত্যনতুন পদ্ধতির সন্ধান করতে গিয়ে লেকটাউনের অরদীপ চট্টোপাধ্যায়ের ‘সোরিনাম থেরাপি’র কথা জানতে পারেন।
কিন্তু ইউএস থেকে কলকাতায় উড়ে আসার মতো শারীরিক অবস্থা রোগীর ছিল না। তখন ফোনে যোগাযোগ করলে অরদীপবাবু কিছু ওষুধ গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। কয়েক সপ্তাহ সেই ওষুধ খাওয়ার পর রোগী কলকাতায় এসে পাঁচ সপ্তাহ ‘সোরিনাম থেরাপি নেন এবং আগের থেকে অনেক বেশি সুস্থ বোধ করেন।
মার্কিন নাগরিক মলি রাপুর জানান, এই নতুন ধরনের থেরাপির ফলে শরীরে জ্বালা-যন্ত্রণা, কষ্ট আগের থেকে অনেক কমেছে। আর ডায়াগনস্টিক রিপোর্টেও অত্যন্ত আশাপ্রদ ফল দেখা গেছে।
আর এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবক অরদীপ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “এই চিকিৎসা পদ্ধতি ক্যান্সার রোগীদের আশার আলো জাগাতে পারবে এবং অনেক কম খরচে রোগীকে থেরাপি দেওয়া যাবে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৩
এসবি/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম, নিউজরুম এডিটর, এসএস