কলকাতা: বর্ষার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ইলিশের মরসুম। মরসুমের শুরুতেই রাজ্যে ছোট ইলিশ মাছ ধরা রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্যের মৎস্য দফতর।
মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে শিবির করে মৎস্যজীবীদের সচেতন করার কাজ চলছে। এই শিবিরের ফলে গত বছর ছোট মাপের ইলিশ মাছ ধরা অনেকটাই বন্ধ করা গিয়েছিল। তাই এবছর বর্ষা আসার আগে থেকেই মৎস্যজীবীদের সচেতন করার জন্য শিবির করা হচ্ছে। ”
এছাড়া মিষ্টি জলে ইলিশ মাছ চাষ করার জন্য একটি নতুন প্রচেষ্টাও নিয়েছে রাজ্য সরকার। নরওয়েতে স্যামন (ইলিশ মাছের একটি প্রজাতি) মিষ্টি জলে চাষ করা হয়। তার অনুকরণে এ রাজ্যেও মিষ্টি জলে ইলিশ মাছ চাষ করার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মৎস্যমন্ত্রী।
মৎস্যমন্ত্রী এবিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উৎসাহ দেখিয়েছেন।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনল্যান্ড ফিসারিস রুলস’-এ ছোট ইলিশ মাছ ধরার ওপর বিধিনিষেধ জারি করা আছে। এ আইনে বলা হয়েছে, কোনো মৎস্যজীবীরা ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁসের জাল ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু বর্তমানে এই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধে ছোট মাপের ইলিশ ধরে চলেছে মৎস্যজীবীরা। এই আইনের দ্বারাই ইলিশ মাছ বিচরণ স্থান গুলিতে বিশেষ বিধিনিষেধ জারি আছে।
এর মধ্যে রয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার ভাগীরথী নদীর লাল বাগ, ফারাক্কার মধ্যবর্তী স্থান, বর্ধমানের কাটোয়া থেকে জেলার হুগলি ঘাট ও ডায়মন্ড হারবার থেকে নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত।
এগুলি বাদ দিয়েও গোদাখালি, সুন্দরবন অঞ্চলের মাতলা, রায়মঙ্গল, ঠাকুরণ নদী এবং ফারাক্কা ব্যারেজের ৫ বর্গকিলোমিটার ব্যাপী ইলিশ মাছের বিচরণ অঞ্চল। ইলিশ মাছ প্রজননের জন্য বিশেষত এ অঞ্চল গুলিতে আসে। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর জেলে এসব অঞ্চল থেকে ছোট ইলিশ ধরতে থাকে। আইন বলবৎ থাকলেও তার ফাঁকেই বেরিয়ে যাচ্ছে মৎস্যজীবীরা।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী জানান, এবার থেকে এই আইনগুলোকে কঠোরভাবে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাতে ছোট মাপের ইলিশ ধরা অনেকাংশে কমবে বলে তার আশা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৩
ভাস্কর/সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, নিউজরুম এডিটর