নয়াদিল্লি: সাইকেল থেকে হেলিকপ্টার। কারসানিভাই প্যাটেলের জীবন চিত্রনাট্য নয়, সম্পূর্ণই বাস্তব।
১৯৪৫ সালে গুজরাটের মেহসানা জেলার রূপপুরে কারসানিভাই খোদিদাস প্যাটেলের জন্ম। মাত্র ২১ বছর বয়সে রসায়নে স্নাতক হন। চোখে ছিল বড় হওয়ার স্বপ্ন। বুক ভরা আশা। ৩৫ বছর পর্যন্ত চাকরি করেছেন। কখনও সরকারি, কখনও বেসরকারি সংস্থায়।
১৯৮০ সালে চাকরি ছেড়ে শুরু করলেন গুঁড়ো সাবানের ব্যবসা। ব্যবসায়ী হিসাবে তার পথচলা শুরু। আজ তিনি ‘নিরমা‘র কর্ণধার। ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তির মালিক। ১৪ হাজার কর্মচারী রয়েছে তার সংস্থায়। এ সংস্থার রয়েছে ফার্মেসি ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজও।
একটা সময় সাইকেলে বাড়ি বাড়ি গুঁড়ো সাবান বেঁচতেন কারসানিভাই। মাত্র তিন টাকা কিলো দরে তার এ গুঁড়ো সাবান অচিরেই দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পায়। ব্যবসা ধীরে ধীরে বাড়ল। পেলেন যশ, খ্যাতি। এ গুঁড়ো সাবান থেকেই আজকের নিরমা।
ওয়াশিং পাউডার নিরমার মালিক কারসানিভাই প্যাটেলের আজ বিলাসবহুল প্রাসাদ আহমেদাবাদে। প্রাসাদের পাশেই তৈরি করছেন হেলিপ্যাড। ৬ আসনের ৪০ কোটি টাকার এ হেলিকপ্টারটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে থাকে।
আহমেদাবাদে তিনি ছাড়া আর মাত্র দুজন ব্যবসায়ীর নিজস্ব হেলিকপ্টার আছে। তারা হলেন আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি ও জাইডাস গ্রুপের কর্ণধার পঙ্কজ প্যাটেল। তিনি চ্যালেঞ্জার ৬০৪-এর মালিক। আদানি গোষ্ঠীর একটি বিচক্র্যাফট ছাড়া দুটি নিজস্ব বিমান আছে।
কারসানিভাই কে.কে প্যাটেল নামে খ্যাত। ওয়াশিং পাউডারের জগতে দেশের নিরমা টেক্কা দিয়েছে হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের সার্ফকেও। তারপর শুরু তার সোপ অপেরা। তবে টিভিতে নয়, বাজারে। সাবান বিক্রির ক্ষেত্রেও লাক্স, লাইফবয়ের মতো ব্রান্ডকে রীতিমতো অল্পদিনে চমকে দিয়েছে নিরমা সাবান। নিরমার তৈরি সাবান যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব।
২০১০ সালে কে.কে প্যাটেল পদ্মশ্রী পেয়েছেন। তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের কুটিরশিল্প সংস্থার উদ্যোগ রতন পুরস্কার পান। ২০০১ সালে ফ্লোরিডার আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয় কারসানিভাইকে সাম্মানিক ডক্টরেট দিয়ে সম্মানিত করে। তার তিন ছেলে রাকেশ, হিরণ ও কল্পেশ এ ব্যবসায় কে.কে প্যাটেলকে সহায়তা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৩
এসপি/সম্পাদনা: কামরুল হাসান কাইউম, নিউজরুম এডিটর, এসএস-eic@banglanews24.com