ঢাকা, শুক্রবার, ২০ ভাদ্র ১৪৩২, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত বাণিজ্যে মন্দাভাব

আগরতলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৩৮, জুলাই ১৩, ২০১৩
আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত বাণিজ্যে মন্দাভাব

আগরতলা (ত্রিপুরা): ডলারের বিপরীতে ভারতীয় টাকার দাম কমে যাওয়ায় প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত বাণিজ্য। এক মাস আগেও যে পরিমাণ সীমান্ত বাণিজ্য হতো এখন তা কমে দাড়িয়েছে দশ ভাগের এক ভাগে।



গত এক মাসে রুপির দাম ডলারের তুলনায় হু হু করে নিচে নেমে যায়। প্রায় নিয়ম করেই প্রতিদিন এ পতন ঘটছে। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এক ডলারের তুলনায় এ দাম কমে হয়েছে প্রায় ৬১ রুপি।

আখাউড়ার সীমান্ত বাণিজ্য ডলারের মাধ্যমে হয়। কিন্তু দাম পতনের ফলে ত্রিপুরার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ত্রিপুরাই বেশি আমদানি করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমদানি করতে বেশি টাকা খরচ হওয়ায় ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরা তাদের আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকে পুরোপুরি বন্ধ রেখেছেন।

ত্রিপুরার সীমান্ত ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা হাবুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, এক মাসে আগে একটি সিমেন্টের ব্যাগ বাংলাদেশ থেকে আনতে যে টাকা খরচ করতে হতো। এখন তার তুলনায় প্রায় ৩০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। ঠিক এক অবস্থা অন্য পণ্য আমদানি‍র ক্ষেত্রেও।

দাম বাড়ার কারণে বন্ধ আছে স্টোন চিপস আমদানি। গত তিন-চার দিন ধরে বাংলাদেশ থেকে কোনো মাছ আমদানি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য আনতে যে টাকা খরচ হচ্ছে, সে টাকা দিয়ে রাজ্যের ভেতরের বাজারে মাল বিক্রি করা যাবে না। সব মিলিয়ে ব্যবসা প্রায় বন্ধ। কবে নাগাদ এ অবস্থা স্বাভাবিক হবে তা কেউই বলতে পারছেন না।

হাবুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, আগে আখাউড়া সীমান্তে প্রতিদিন প্রায় এক থেকে এক কোটি ২৫ ল‍াখ ভারতীয় টাকার বাণিজ্য হতো। এ সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫ ল‍াখ টাকায়। তিনি জানান, এপারের ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় উৎসাহ হারাচ্ছেন।

ব্যবসায়ীদের চেয়েও খারাপ অবস্থা শ্রমিকদের। যেখানে দৈনিক হাজিরা খেটে একজন শ্রমিক দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করতেন। সেখানে এখন দিনে ৬০ টাকা আয় করতেই কষ্ট হচ্ছে। শ্রমিকেরা টাকা পান ট্রাকে মাল উঠানামা করিয়ে। বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাকই আসছে না। ফলে শ্রমিকদেরও আয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।
এ সীমান্তে যেসব ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন তাদের অনেকের মতে এমন অবস্থা কখনও আগে হয়নি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সাল থেকে আখাউড়া দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য শুরু হয়। ওই বছর ব্যবসা হয়েছিল চার ল‍াখ টাকার। এরপর থেকেই প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে এ সীমান্ত বাণিজ্যের বহর। একবারের জন্যও এ ব্যবসা নিম্নমুখী হয়নি।

বাণিজ্যের জন্য ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন পণ্য সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু এবার চিত্রটাই উলটে গেছে। রুপির দাম পতনে ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন। আর সীমান্ত বাণিজ্যের গ্রাফ প্রতিদিনিই নিচের দিকে নামছে।

বাংলাদেশ সময় ২২৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: কামরুল হাসান কাইউম, নিউজরুম এডিটর/ সাব্বিন হাসান, eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।