কলকাতা: দুই বাংলার অতি কাছের মানুষ জ্যোতি বসু আজ বেঁচে থাকলে তিনি একশো বছরে পা রাখতেন এ দিনটিতে (৮ জুলাই)। এক সময় বামফ্রন্ট সরকারকে একক হাতে গড়ে তুলেছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী গ্রামের সন্তান জ্যোতি বসু। বাবার চিকিৎসা পেশার কারনে তিনি বেড়ে উঠেছেন কলকাতায়। কিন্তু কখনো ভুলে যাননি- একেবারে মেঘনা কোল ঘেসে বারদী গ্রামকে।
তাইতো শিক্ষা জীবনের ছুটিছাটায় ছুটে আসতেন বারদীতে। ঝাপাতেন মেঘনায়। বিয়েও করেছিলেন বারদী গ্রামেই বিখ্যাত নাগ পরিবারের মেয়েকে।
তিনি আজ আর নেই। কিন্তু তাঁর কর্মকাণ্ড দৌলতে সবাইয়ের কাছে আজও তিনি জীবিত হয়ে রয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে রাজ্য সম্পাদক, লোকসভার সাবেক স্পিকার থেকে বিধানসভার সাবেক স্পিকার একবাক্যে সবাই বলেন, দলের মধ্যে জ্যোতিবাবু ছিলেন শৃঙ্খলা পরায়ণতার প্রতীক।
দলের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত। যা কঠোরভাবে মেনে চলতেন তিনি। মেনে চলার পরামর্শ দিতেন সহকর্মীদেরও। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একবারই তার ব্যতিক্রম হয়েছিল। নিজেই হয়ে উঠেছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। তবু কখনও দলের উপরে উঠতে চাইতেন না।
১৯৯৬-এর কথা। কেন্দ্রে অকংগ্রেসি, অবিজেপি সরকারের প্রধান হওয়ার সুযোগ আসে জ্যোতি বসুর কাছে। সে প্রস্তাবে সায় ছিল স্বয়ং জ্যোতি বসু আর সিপিআইএমের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিং সুরজিতের।
দু’দফায় বৈঠকে বসে সিপিআইমের কেন্দ্রীয় কমিটি। ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায় জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে নেন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ জ্যোতি বসু। তবে পরে একটি সাক্ষাৎকারে দলর সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ভুল বলে মন্তব্য করেন তিনি। তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে দলের ভিতরে। তবে জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি দল।
আর তার মাসুল থেকে জ্যোতিবাবুর অনেক সহকর্মী এখনও মনে করেন, ঐতিহাসিক ভুলটা না করলে জাতীয় রাজনীতিতে সিপিআইএমের গুরুত্ব কয়েকগুণ বাড়ত।
দল তাঁর কথা মানেনি। তবু তিনি দল ছাড়েননি। শেষ জীবন পর্যন্ত সাধ্যমতো দলের কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ সময় : ১৬০১ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৩
এসপি/ সম্পাদনা: এসএস