ঢাকা: পৃথিবীর কোনো কোনো অঞ্চলের মানুষ বর্তমান সময়ের গড় তাপদাহ-ই সহ্য করতে পারছেন না। প্রমাণ স্বরূপ যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিককালের তাপদাহে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রাণহানির কথা উল্লেখ করা যায়।
কিন্তু এই প্রাণঘাতী তাপদাহ এখানেই থেমে থাকবে না। জীব-প্রাণী বৈচিত্র্যের জন্য ক্রমেই হুমকি হয়ে ওঠা বর্তমান তাপপ্রবাহেরও দ্বিগুণ হয়ে যাবে ২০২০ সালের তাপদাহ। সম্প্রতি এমনই উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছেন জার্মানি ও স্পেনের গবেষকরা।
নাসার তথ্য মতে বর্তমান পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিসেব অনুযায়ী যদি শীতপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে বর্তমান গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে তবে ২০২০ সালে হবে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে হিসেবে উষ্ণতাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে বর্তমান গড় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে ২০২০ সালে হবে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অন্যদিকে, শীতপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে গ্রীষ্মকালে যদি তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায় তবে ২০২০ সালে এই তাপমাত্রা উঠে দাঁড়াবে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর উষ্ণতাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে গ্রীষ্মকালে যদি তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে দাঁড়ায় তবে ২০২০ সালে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রার হিসেব খুঁজতে যাওয়া বেশ ভয়ংকর ব্যাপার বটে।
বৃহস্পতিবার ‘এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটার্স’ শীর্ষক এক মার্কিন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উষ্ণ গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ না করলে এবং সঠিক পদক্ষেপ না নিলে ‘২০২০ সালে দ্বিগুণ হয়ে ২০৪০ সালে চারগুণ হবে পৃথিবীর তাপমাত্রা। ’
গবেষকরা বলেন, কার্বন গ্যাস নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রাও বাড়তে থাকবে দ্রুতগতিতে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর আন্তঃসরকার প্যানেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘এই শতাব্দীতে পৃথিবীর অধিকাংশ এলাকায়ই তীব্র তাপদাহ অনুভূত হবে। ’
জার্মানিভিত্তিক পরিবেশ গবেষণা বিষয়ক সংস্থা ‘পোস্টডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ’র সদস্য দিম কৌমৌ বলেন, ‘যদি উষ্ণ গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ না হয় তবে পৃথিবীর সবচেয়ে শীতপ্রবণ অঞ্চলেও বর্তমান সময়ের সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহের অঞ্চলের চেয়ে বেশি তাপদাহ অনুভূত হবে। ’
গবেষকরা জানান, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে তাপমাত্রা যেমন খুব দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে, তেমনি সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে বারবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com