ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

কায়রোর ফাতাহ মসজিদ থেকেও উচ্ছেদ ব্রাদারহুড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৪০, আগস্ট ১৭, ২০১৩
কায়রোর ফাতাহ মসজিদ থেকেও উচ্ছেদ ব্রাদারহুড

ঢাকা: এবার কায়রোর আল ফাতাহ মসজিদ থেকেও ব্রাদারহুড কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

দেশটির সেনানিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পুরো ফাতাহ মসজিদ এখন ব্রাদারহুডশূন্য।

অধিকাংশ বিক্ষোভকারীকে সরে যেতে দেওয়া হলেও শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শুক্রবারের জুমার নামাজের পর থেকে রামসেস স্কয়ারের পাশে অবস্থিত এই মসজিদ ও তার আশপাশে অবস্থান নেয় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকরা। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ওই মসজিদ ও আশপাশের এলাকা খালি করে দিতে বলা হলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে মুরসি সমর্থকরা। নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানের মুখে মসজিদের পাশ থেকে কিছু ব্রাদারহুড সমর্থক সরে গেলেও ভেতরে অবস্থানরত প্রায় হাজারখানেক মুরসি সমর্থক অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়েই শনিবার বিকেলে ওই মসজিদে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, অবরুদ্ধ মসজিদের মিনারকে লক্ষ্য করে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষও হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত জোরালো অভিযানের মুখে মসজিদ খালি করে দিতে বাধ্য হয় ব্রাদারহুড কর্মীরা।

তবে সেনা কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য না করায় এ অভিযানে কোনো হতাহতের খবর জানাতে পারেনি সংবাদ মাধ্যমগুলো।

এর আগে, ফাতাহ মসজিদের সামনে মুরসি সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় বলে জানায় সংবাদ মাধ্যম। মসজিদের পাশ থেকে কামানের গোলারও আওয়াজ শোনা গেছে বলে জানায় বিবিসি অনলাইন।

এদিকে মিশরের সরকারি মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, শুক্রবারের সহিংসতায় ১৭৩ জন ব্রাদারহুড সমর্থক নিহত হয়েছে।

এছাড়া, শুক্রবার সেনাবাহিনীর গুলিতে ব্রাদারহুডের প্রধান নেতা মোহাম্মদ বদিইর ছেলে আম্মর বদিইও নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সেনাসমর্থিত অন্তর্বতী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল বেবলায়ি জানিয়েছেন, ব্রাদারহুডকে আইনানুগভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড ও বিশ্বব্যাপী ‍নিন্দার ঝড় ওঠা সত্ত্বেও বেবলায়ির এ ধরনের ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলবে।

এর আগে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে স্বপদে বহাল করার দাবিতে মুসলিম ব্রাদারহুডের বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ছয় শতাধিক লোক নিহত হয়। তবে ব্রাদারহুড ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি অনুযায়ী ওই দিনের নিহতের সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি।

বুধবারের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবারকে ‘ক্রোধ দিবস’ ঘোষণা করে নতুন করে বিক্ষোভের ডাক দেয় এক সময়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত দল ব্রাদারহুড।

অপরপক্ষে ব্রাদারহুডকে দমাতে আগে থেকেই রণপ্রস্তুতি নিয়ে রাখে সেনা কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, উভয়পক্ষই সহনশীলতা না দেখালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৩
এইচএ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।