ঢাকা: সাম্প্রতিক সহিংসতায় কয়েকশ’ মানুষ নিহত হওয়ার পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করতে আলোচনায় বসছে মিশরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিপরিষদ।
দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো রোববার এ কথা জানিয়েছে।
এর আগে শনিবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল বেবলায়ির বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, মুসলিম ব্রাদারহুডকে আইনানুগভাবে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
এছাড়া ব্রাদারহুডের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বেবলায়ি কঠোর ভাষায় বলেছেন, ‘যাদের হাত রক্তে রঞ্জিত এবং যারা রাষ্ট্র ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে তাদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়। ’
ব্রাদারহুডের বিক্ষোভ ও সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছেন সরকারের মুখপাত্র শরিফ শাওকী।
গত ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির ক্ষমতাচ্যুতির পর ব্রাদারহুড বিক্ষোভে নামলেও তা কঠোরভাবে দমন করে চলেছে সেনা কর্তৃপক্ষ। যদিও মুরসির দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকার ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে।
এ দিকে, শনিবার দিনগত রাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেক্সান্দ্রিয়ার রাস্তায়ও বিক্ষোভ করেছে মুরসি সমর্থকরা। এখানে অন্তত ২১ মুরসি সমর্থক নিহত হয়েছে বলে জানায় সেনানিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমগুলো। এছাড়া কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ হয়েছে হেলওয়ান ও মিন্যা শহরেও।
এর আগে শনিবার বিকেলে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে অভিযান চালিয়ে কায়রোর আল ফাতাহ মসজিদ থেকে ব্রাদারহুড সমর্থকদের সরিয়ে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী।
অবরুদ্ধ মসজিদে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বেশ কয়েকজন মুরসি সমর্থক নিহত হয়েছে বলে জানায় সংবাদ মাধ্যমগুলো। এখানে দীর্ঘ সময় ধরে গুলি বিনিময় এমনকি কামানের গোলার আওয়াজও শোনা গেছে বলে জানায় বিবিসি অনলাইন।
তবে ফাতাহ মসজিদে হতাহতের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।
গত বুধবার সেনা অভিযানে প্রায় সাতশ’ ব্রাদারহুড সমর্থক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবারকে ‘ক্রোধ দিবস’ ঘোষণা করে নতুন করে বিক্ষোভের ডাক দেয় এক সময়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটি।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করায় রামসেস স্কয়ার ও ফাতাহ মসজিদের আশপাশে নিরাপত্তা বাহিনী ফের অভিযান চালালে আরও ১৭৩ জন ব্রাদারহুড কর্মী নিহত হয়।
শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১০ হাজারেরও বেশি ব্রাদারহুড সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া, শনিবার সন্ধ্যায় আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আইমান আল-জাওয়াহিরির ভাই মোহাম্মদ আল-জাওয়াহিরিকেও গ্রেফতার করার দাবি করে মিশরের সেনা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৩
এইচএ/আরআইএস