ঢাকা: ২০১৪ সালের মধ্যে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস বা অপসারণ করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মতৈক্যকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
রোববার আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে সিরিয়া জনপ্রতিশ্রতি রক্ষা করবে।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন অনেক কঠিন হবে উল্লেখ করে ওবামা বলেন, এই অন্তিম সময়ে মার্কিন-রুশ চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে আনতে এই মতৈক্য কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে এবং শেষ পর্যন্ত রাসায়নিক অস্ত্রগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।
তবে ওবামা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস বা অপসারণের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাতিসংঘ ও অন্য দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। আসাদ সরকার যদি এই কাঠামো অগ্রাহ্য করে তাহলে তাদের মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ওবামা বলেন, যদি কূটনীতি ব্যর্থ হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
এর আগে, শনিবার জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই লাভরভ রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে ওয়াশিংটন-মস্কোর মতৈক্যের কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে কেরি রাসায়নিক অস্ত্রের বিষয়ে সিরিয়ার প্রতি ছয়টি নির্দেশনা উল্লেখ করেন। নির্দেশনা অনুযায়ী সিরিয়াকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মজুদকৃত সকল রাসায়নিক অস্ত্রের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, যদি সিরিয়া এই চুক্তি মেনে নিতে ব্যর্থ হয়ে তাহলে দেশটির বিরুদ্ধে অথনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক বল প্রয়োগ করা হতে পারে।
মার্কিন-রুশ মতৈক্যে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো-
১. সিরিয়ার কাছে রাসায়নিক অস্ত্র যতটুকুই আছে তা দ্রুত আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে।
২. এক সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্র জমা দিতে হবে।
৩.আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন অনুযায়ী দ্রুত সেগুলো ধ্বংস করতে হবে।
৪. সব জায়গায় পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শন করার সুযোগ দিতে হবে।
৫.সিরিয়ার আশেপাশের অঞ্চল থেকে সম্ভাব্য অপসরণযোগ্য সকল রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করতে হবে।
৬. তবে জাতিসংঘ সনদের সপ্তম ধারায় সিরিয়াকে সকল আইনগত সমর্থন দেওয়া হবে।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ে মার্কিন-রুশ চুক্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে চীন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো।
তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি দামেস্ক। অবশ্য, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৩
এইচএ/বিএসকে