ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মুজদালিফার উদ্দেশে হাজিরা

সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৩
মুজদালিফার উদ্দেশে হাজিরা

মক্কা: সারাদিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর সূর্যাস্তের পরপরই মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন হাজিরা। আরাফাতের ময়দান থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে মুজদালিফা।

পায়ে হেঁটে সেখানে গিয়ে রাতে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করবেন ধর্মপ্রাণ হাজিরা।

মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা কেউ ট্রেনে, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে মিনায় যাবেন এবং নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরবেন।

মিনায় বড় শয়তানকে ৭টি পাথর নিক্ষেপের পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। তারপর সেলাইবিহীন দুই টুকরো কাপড় বদল করবেন হাজিরা।

এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। সেখানে আরো এক বা দুইদিন অবস্থান করে হজের অন্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করবেন। মিনার কাজ শেষে আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর যারা মদিনায় যাননি, তারা মদিনায় যাবেন। যারা আগে মদিনায় গেছেন, তারা নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।

হাজিরা বুধবার কোরবানি দেবেন। অধিকাংশ হাজি নিজে বা বিশ্বস্ত লোক দিয়ে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট ও জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেবেন। ইচ্ছে করলে ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকে (আইডিবি) অর্থ জমা দিয়ে কোরবানি দিতে পারবেন তারা।

মিনায় জামারাতের (শয়তানের উদ্দেশ্যে পাথর মারার স্থান) কাছে ও পুরো মিনায় বিভিন্ন দেশের ভাষার পাশাপাশি বাংলায়ও নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। হাজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ পুলিশ, আধা সামরিক ও সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে। হাজিরা পথ হারিয়ে ফেললে স্বেচ্ছাসেবক, স্কাউট ও হজকর্মীরা তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে থাকেন।

এর আগে সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়ার (দুপুর) পর মসজিদ নামিরা থেকে খুতবা প্রদান করেন সৌদি আরবের প্রধান মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ আল শায়খ।

প্রায় ৩৫মিনিট স্থায়ী খুৎবায় মুফতি কোরান হাদিসের মূলনীতির ভিত্তিতে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহবান জানান। আরাফারাতের ময়দানে নাজিলকৃত কোরানের আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ইসলামই আল্লাহর মনোনীত একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। আর এই দ্বীন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত।
 
খুৎবায় তিনি ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শান্তির বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ফেতনা, ফাসাদ, রক্তপাতের অনুমতি নেই ইসলামে। এসময় তিনি দাওয়াতের গুরুত্বারোপ করে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানের দায়িত্ব পালনের কথা মুসলমানদের স্মরণ করিয়ে দেন।

সমবেত মুসল্লিরা খুতবা শোনেন এবং জোহরের ওয়াক্তে জোহর ও আসরের নামাজ পরপর আদায় করেন একই ইমামের পিছনে। এরপর হাজিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে চোখের পানিতে বুক ভিজিয়ে আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের প্রার্থনা করেছেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও করুণা কামনা করেছেন কায়মনো বাক্যে।

এবার ২০ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মানুষ পবিত্র হজ পালন করেছেন। তবে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য মতে, এবার বিদেশি হজযাত্রী ১৩ লাখ ৮০ হাজার। যা গত বছরের চেয়ে ২১ ভাগ কম।

মসজিদুল হারাম ও মাতাফের সম্প্রসারণ কাজের জন্যই এবার হজযাত্রী হ্রাস করা হয়েছে। এবার ১১৮টি দেশ থেকে হাজি এসেছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এদিকে গতকাল ফজরের নামাজের পর মক্কায় কাবাঘরের পুরনো গিলাফ খুলে নতুন গিলাফ লাগানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৩
এমএএ/এমজেএফ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।