ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নিজ দূতকে ‘ভারতের দালাল’ বলেছিলেন নিক্সন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৩
নিজ দূতকে ‘ভারতের দালাল’ বলেছিলেন নিক্সন

ঢাকা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থানের পক্ষে কথা বলায় ভারতে নিযুক্ত নিজ দেশের রাষ্ট্রদূতকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। শুধু তাই নয়, তাকে ‘ভারতের দালাল’ বলে কটূক্তিও করেছিলেন বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।



বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভের পেছনে ভারতের অশেষ অবদান রয়েছে। বিশেষ করে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের অবস্থানকে যৌক্তিক হিসেবে প্রেসিডেন্টের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ বি কিটিং।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াইয়ার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ কানে তুলতেন না নিক্সন। বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর সঠিক চিত্র তুলে ধরায় কেনেথ বানার্ড কিটিংকে চাকরিচ্যুত করতে উদ্যত হয়েছিলেন তিনি।

নিক্সন তার সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারকে বলেছিলেন, কিটিং একজন বিশ্বাসঘাতক এবং তাকে চাকরিচ্যুত করা তাদের উচিত। ভারতীয়রা ভয়ানক কিন্তু কিটিংয়ের কাছে কিছু তারা সহায়তা পাচ্ছে।

প্রেসিডেন্টের কথার সঙ্গে একমত হয়ে কিসিঞ্জারও বলেছিলেন, অনেক সহায়তা পাচ্ছে; সে (কিটিং) আসলে তাদের মুখপাত্র। ’

‘দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম: নিক্সন, কিসিঞ্জার, অ্যান্ড অ্যা ফরগটেন জোনোসাইড’ নামক গ্রন্থে উঠে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি চরিত্র। বইটি লিখেছেন, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক গ্যারি বাস।

গ্রন্থে বলা হয়েছে, ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তৎকালীন ‍পূর্বপাকিস্তানে ‘পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা চালায় এবং নিক্সন প্রশাসন চোখ বন্ধ করে বসে ছিল।

মার্কিন অধ্যাপক বলেছেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তি তুলে ধরে বলেছিল, দেশে অনেক বাঙালি থাকায় নির্বাচনে হেরে গিয়ে পাকিস্তানের জেনারেলরা এখন পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা গণহারে নির্মূল করতে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, যেন ‍তারা (বাঙালিরা) আর পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হতে ন‍া পারে। ’

গ্রন্থটিতে এও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিধনযজ্ঞ চালানো হলেও তা প্রথমে বললেও চেপে যেতে থাকে ভারত সরকার। কেননা তারা চাচ্ছিল না, হিন্দুর ওপর হত্যাযজ্ঞের তথ্য প্রকাশ করে ভারতের হিন্দুবাদী চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলোকে উসকে দিতে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৩
এসএফআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।