ঢাকা: লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইরানের দূতাবাসে জোড়া বিস্ফোরণে কূটনীতিকসহ কমপক্ষে ২৩ জন নিহত ও ১৪৬ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে এসব হামলা হয়।
এপির বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ইরানি দূতাবাসে প্রধান ফটক উড়ে গেছে এবং তিনতলা বিশিষ্ট ভবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হেজবুল্লাহর টিভি চ্যানেল আল-মানার সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, প্রথম এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটান। আর দ্বিতীয়টি ছিল গাড়িবোমা হামলা। গাড়িবোমা হামলায় ভবনটি বেশি ক্ষতি হয়।
নিহতদের মধ্যে ইরানের কালচারাল অ্যাটাশেও রয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানের আরবি ভাষার টেলিভিশন
চ্যানেল আল-আলম। টেলিভিশনটির ফুটেজে পুড়ে যাওয়া গাড়ি, রাস্তায় নিহতদের দেহ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবন দেখা গেছে।
আল-জাজিরাকে সূত্র জানিয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রদূত নিরাপদে ও সুস্থ রয়েছেন। কালচারাল অ্যাটাশে ইব্রাহিম আনসারির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কিন্তু কোথায় ও কখন তিনি মারা গেছেন তা জানাতে পারেন নি ওই সূত্র। তবে ইরানি সূত্র জানিয়েছে, তাদের সব কর্মকর্তা সুস্থ ও নিরাপদে রয়েছেন।
কিভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। এক নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছেন, দুটি রকেট হামলায় বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে আরেক নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, গাড়িবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে।
ইরানের দূতাবাসের এক প্রহরী জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রথম বিস্ফোরণটি মোটর সাইকেল আরোহী এক
আত্মঘাতি করেছে। সে দূতাবাসের প্রধান ফটকের নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটেছে গাড়িবোমা হামলায়। দ্বিতীয় হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইরান ও লেবাননের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এ হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’
হিসেবে উল্লেখ করেছেন লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। তিনি বলেন, এ হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে লেবাননকে অস্থিতিশীল করে তোলা।
অভিযোগ রয়েছে,লেবাননের শিয়াদের জঙ্গি গোষ্ঠী হেজবুল্লাহর প্রধান সমর্থনদাতা হচ্ছে ইরান। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিতে দেশটিতে যোদ্ধা পাঠিয়েছে হেজবুল্লাহ।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ লেবাননে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইরানি দূতাবাসসহ বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলকে হেজবুল্লাহর শক্তঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই অঞ্চলে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৫ আগস্ট বোমা হামলায় বৈরুতের দক্ষিণে ১৬ জন নিহত হয়। গত জুনে লেবাননের সীমান্তে সিরিয়ার কুসায়েরে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বাশারবাহিনীর কৌশলগত জয়ে ভূমিকা রেখেছিল হেজবুল্লাহ যোদ্ধারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৩
এসএফআই/বিএসকে