ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সাংবিধানিক সভা নির্বাচনে নেপালে ভোটগ্রহণ শেষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৩
সাংবিধানিক সভা নির্বাচনে নেপালে ভোটগ্রহণ শেষ

ঢাকা: নতুন সাংবিধানিক সভা নির্বাচনে নেপালে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে নির্বাচনে কোন দল জিতবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।

এর আগে দেশটিতে রাজতন্ত্রের অবসানের পর সংবিধান প্রণয়ন দীর্ঘ সময় ধরে বিলম্বিত হয়।

বিবিসি অনলাইন দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ লোকের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ভোটগ্রহণের শুরুতে রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি ভোট কেন্দ্রের ৫০ মিটার দূরে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিনজন আহত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচন বিরোধীরাই এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

নেপালের প্রধান দলগুলো নিয়ে এ বছরের শুরুতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তত্ত্বাবধানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি খিলরাম রেজমির নেতৃত্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

ভোট শুরুর মুহূর্তে রেজমি দেশের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনার নিন্দা করে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীকে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।

২০০৬ সালে মাওবাদীদের সঙ্গে সরকারের যুদ্ধের সমাপ্তির পর দ্বিতীয়বারের মতো মঙ্গলবার সাংবিধানিক সভা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন নেপালিরা।

নেপালে দেশের সংবিধান প্রণয়নের জন্য ২০০৮ সালে ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রের অবসানের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো সাংবিধানিক সভার নির্বাচন হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংবিধান প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হন। একাধিকবার সংবিধানের খসড়া প্রস্তুতের সময়সীমা বেঁধে দিলেও কাজ হয়নি।

বিচ্ছিন্নতাকামী মাওবাদী দল সমর্থিত বিরোধী দলগুলোর একটি জোট দেশজুড়ে এ ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, নতুন করে সর্বদলীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে পরে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।

ভোটগ্রহণের সময় বিচ্ছিন্নভাবে কয়েক জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে। বিরোধী দলের আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে রাজধানী থেকে দূরবর্তী জুমলা শহরে একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

ব্যালট পেপার লুট হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণের দাইলেখ জেলার একটি ভোটকেন্দ্রে কয়েক ঘণ্টার জন্য ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
 
৬০১ সদস্য বিশিষ্ট সাংবিধানিক সভা নির্বাচনে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিতে পারবে।

প্রধান তিন দল ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী), নেপালি কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালসহ (ইউএমএল) এক শর বেশি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।  

কয়েক শ বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণে নেপালে অবস্থান করছেন।

এর আগে একাধিকবার সংবিধানের খসড়া প্রস্তুতের সময়সীমা বেঁধে দিলেও কাজ হয়নি। সবশেষ সময়সীম‍া ছিল ২০১২ সালের ২৭ মে। কিন্তু এর আগেই নেপালে সরকার ও বিরোধী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী নানা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। দেশে শান্তি বজায় রাখতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

সংবিধান প্রণয়নের শেষ সময়সীমা পেরিয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালের ২২ নভেম্বর সাংবিধানিক পরিষদের নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক করে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচন্ডের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল নির্বাচিত ৬০১ আসন বিশিষ্টি সাংবিধানিক সভার নির্বাচিত ৫৭৫ আসনের মধ্যে ২২০টি আসন পেয়ে প্রথম হয়। এককভাবে সরকার গঠনে ৩০১ আসন না পাওয়ায় জোট সরকার গঠন করতে হয় প্রচন্ডকে।

২০০৯ সালে সেনাপ্রধানকে সরানো ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট রাম বরণ যাদবের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রচণ্ডকে সরকার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৩
কেএইচকিউ/জিসিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।