ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

শান্তি আলোচনা কমিটিতে ইমরানকে চায় তালেবান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৪
শান্তি আলোচনা কমিটিতে ইমরানকে চায় তালেবান

ঢাকা: শান্তি আলোচনা কমিটিতে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি)। একইসঙ্গে কট্টরপন্থি ধর্মীয় নেতা সামিউল হককেও এই শান্তি আলোচনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।



তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার আয়োজন করতে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ৪ সদস্যের পরিষদ ঘোষণার পর শনিবার তার কাছেই এ দাবি জানায় তালেবানরা।

আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া শান্তি আলোচনায় সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য গত ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে (ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি) একটি কমিটি ঘোষণা করেন নওয়াজ শরিফ।

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে শান্তি আলোচনা ত্বরান্বিত করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান টিটিপির মুখপাত্র শহীদুল্লাহ শহীদ।  

নওয়াজের ঘোষণা অনুযায়ী, তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করবেন আইএসআই’র সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমির, প্রবীণ সাংবাদিক রহিমুল্লাহ ইউসুফজাই ও ইরফান সিদ্দিকী এবং আফগানিস্তানে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত রুস্তম শাহ মোহাম্মদ। এই কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান। আলোচনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

সূত্র জানিয়েছে, ইমরান খান ও তালেবানদের ‘জনক’ হিসেবে পরিচিত সামিউল হকের পাশাপাশি এই শান্তি আলোচনা কমিটিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা সিরাজুল হক ও মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জামায়াতে উলেমা-ই-ইসলামের (এফ) নেতা মুফতি কিফায়তুল্লাহ এবং লাল মসজিদের ধর্মীয় নেতা আব্দুল আজিজকেও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে টিটিপি।

সংশ্লিষ্ট একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে তালেবানদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ৯ সদস্যের একটি পরিষদও বাছাই করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন ক্বারী শাকিল।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ গঠিত শান্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে গত তিন ধরে বৈঠক করছে তালেবানের সর্বোচ্চ পরিষদ।

বৈঠকে সরকারের এই শান্তি কমিটিতে গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সাবেক কর্মকর্তা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আমির ও সাবেক রাষ্ট্রদূত রুস্তম শাহকে ধরে রাখার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
 
অবশ্য সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, তালেবানদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ধর্মীয় নেতা আব্দুল আজিজ। আইএসআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিরই তাকে এই আলোচনায় অংশ নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ইসলামাবাদের মসজিদের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা আজিজ জানান, তিনি আলোচনার সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু তালেবানদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারবেন না।

তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিক আলোচনায় তালেবানদের নিজস্ব বক্তব্য ও দাবি উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে আলোচনার সময় যাতে কোনোভাবেই কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা চালানোর চেষ্টা করা না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন নওয়াজ।

যদিও গত শান্তি আলোচনা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর তালেবানরা সিরিজ হামলা চালাবে এমন গোয়েন্দা বার্তা পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো আশা করছে তালেবান-সরকারের এই আলোচনা ব্যাহত করতে অনেক ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও শান্তি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে সরকার।
 
বাংলাদেশ সময় : ১৭২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।