ঢাকা: অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভারত উন্নয়নের দিকে ধাবিত হলেও দেশটির কিছু এলাকা এখনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। ভারতের অনেক রাজ্যে এখনও মেয়ের জন্মকে অভিশাপ মনে করা হয়।
ঝাড়খণ্ডের এক বাসিন্দা গুঞ্জন মাসাত। তিনি চেয়েছিলেন তার পুত্র সন্তান হবে। কিন্তু তার মেয়ে সন্তান আসে। কূপমণ্ডুক সমাজের বাস্তবায়তায় মেয়ের জন্মকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি গুঞ্জন মাসাত। তার এক বিন্দুও ভালোবাসা ছিলনা সদ্যজাত মেয়েটির প্রতি।
মেয়ে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছিলেন গুঞ্জন মাসাতের স্ত্রী আন্নু দেবী। এটি দেখে তেলে-বেগুনে জ্বলে আগুন হয়ে উঠেন গুঞ্জন। আন্নু ও কন্যার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরও কোনো পশুত্বের আচরণের বহিঃপ্রকাশ দেখান তিনি। আগুন না নিভিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিনি তা দেখেন।
৩০ জানুয়ারি সকালে ঘরের বারান্দায় দেবী ও তার শিশুকে কাঁতরাতে দেখেন এক প্রতিবেশি । ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পরপরেই তাদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
দেবীর বাবা রাঘুনি রানা বলেছেন, এক বছর আগে বিয়ের পর সুখে-শান্তিতে চলছিল তার মেয়ের সংঘার। কিন্তু কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর দেবীর ঘরে আগুন লাগে। তারা পুত্র চেয়েছিল। কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করেনি, মেয়ে জন্ম দেওয়া দেবীর দোষ নয়।
মেয়েকে হত্যার আগ পর্যন্ত নানা রকম নির্যাতন ও অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে দাবি তার। তিনি জানান, মেয়ের জামাইয়ের পরিবার যৌতুক হিসেবে একটি টেলিভিশন ও একটি মোটরসাইকেল দাবি করেছিল। যৌতুক হিসেবে বরপক্ষকে দুই বিঘা জমি দিয়েছেন তিনি।
ভারতের অপরাধ রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য, যৌতুকের কারণে ভারতে ‘প্রতি ঘণ্টা’য় একজন নারীর প্রাণহানি হয়। গত বছর ৮ হাজার ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়। তাদের অধিকাংশই ছিলেন নববধূ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৪