ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৫০ বছরেও মেলে না নিখোঁজ উড়োজাহাজ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৪
৫০ বছরেও মেলে না নিখোঁজ উড়োজাহাজ!

ঢাকা: ২৩৯ আরোহীবাহী মালয়েশীয় উড়োজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন চলে যাচ্ছে। কিন্তু এর কোনো হদিস এখনও মিলেনি।



প্রযুক্তি নিয়ে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন প্রশ্ন তুললেও এর আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। কোনো বিপদ সংকেত না পাঠালেও রাডার থেকে হারিয়ে গেছে উড়োজাহাজ।

কোনোটি নিখোঁজের পরপরেই বা ৫ দিন পর পাওয়া গেছে। কিন্তু কিছুক্ষেত্রে নিখোঁজ হওয়ার ৫০ বছর পেরুলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এমন কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো:

এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৪৭



২০০৯ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও থেকে ফ্রান্সের প্যারিসে যাচ্ছিল এ ৩৩০ এয়ারবাস। যাত্রী ও ক্রুসহ ২২৮ আরোহীবাহী উড়োজাহাজটি আটলান্টিক মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে টানা ৫ দিন লাগে সন্ধান ও উদ্ধারকারীদের। আর তিন বছর লেগে যায় কীভাবে উড়োজাহাজের অটোপাইলট ব্যবস্থা অকার্যকর হয় তা বের করতে। আরোহীদের ৭৪ জনের কোনো হদিস মেলে নি উদ্ধারকারীদের।

উরুগুয়ের এয়ার ফোর্স ফ্লাইট ৫৭১



৪৫ যাত্রী ও ‍ক্রুবাহী উরুগুয়ের এয়ার ফোর্স ফ্লাইট ৫৭১ উড়োজাহাজটি ১৯৭২ সালে আন্দুজ পর্বতমালার ওপর দিয়ে চিলির সান্তিয়াগো যাওয়ার সময় প্রতিকূল আবহাওয়ায় পড়ে।   উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে ১২ জনের প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু ঘটনার ৭২ দিনও কর্তৃপক্ষ জানত না অন্যান্য আরোহী বেঁচে আছেন। এ সময়ের মধ্যে তুষার ধসে আরও ৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। বেঁচে থাকাদের পরে উদ্ধার করা হয়।

ফ্লাইং টাইগার লাইন ফ্লাইট ৭৩৯

১৯৬২ প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম থেকে ৯০ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে ফিলিপাইনের উদ্দেশে রওনা দেয় ফ্লাইং টাইগার লাইন ফ্লাইট ৭৩৯। কিন্তু আজও ফিলিপাইনে পৌঁছায়নি উড়োজাহাজটি। মালয়েশিয়ার এমএইচ ৩৭০ উড়োজাহাজটিও যেমন হারিয়ে যাওয়ার আগে কোনো বিপদ সংকেত পাঠায়নি ফ্লাইং টাইগারও। ১৩০০ জনের সামরিক তল্লাশি অভিযানে উড়োজাহাজের এক টুকরোও পাওয়া যায়নি।

লাইবেরিয়ার ট্যাঙ্কার জাহাজের একজন নাবিক দাবি করেন, তিনি আকাশে উড়োজাহাজ উড়ে যাওয়ার সময় ‘অতি উজ্জল আলোর ঝলকানি’ দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল অ্যারোনোটিক্স বোর্ড তা আমলে নেয়নি।

ব্রিটিশ সাউথ আমেরিকান এয়ারওয়েজ



আন্দুস পর্বতমালায় ১৯৪৭ সালে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ১১ আরোহীবাহী উড়োজাহাজটির বিধ্বস্তের চিহ্ন খুঁজে পেতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় লাগে। ১৯৯৮ সালে আন্দুজ পর্বতমালার চূড়ায় উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেন দুই আর্জেন্টাইন পর্বত আরোহী। এর পর সেনাবাহিনীর এক অভিযানে মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। অনেক বলেন, উড়োজাহাজটি তুপানগাতো পর্বতে বিধ্বস্ত হওয়ায় তুষারধস হয়েছিল।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল



ফ্লোরিডা, পুয়ের্তো রিকো ও বারমুডার মধ্যবর্তী উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ‍অংশ ‘ভূতের ত্রিভুজ’ (ডেভিল’স ট্রায়াঙ্গেল) নামে পরিচিত। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল উড়োজাহাজের জন্য বিপজ্জনক এক এলাকা। এর আশপাশে কিংবা উপর দিয়ে উড়োজাহাজ চালানোর সাহসিকতা খুব কম পাইলটেরই আছে।

১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৫টি সামরিক উড়োজাহাজ আটলান্টিক মহাসাগরের এ অংশের ওপর মহড়া চালাতে গিয়ে আর ফেরত আসেনি।

এ ডেভিল’ল ট্রায়াঙ্গেলের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালে ব্রিটিশ সাউথ আমেরিকান এয়ারওয়েজের দুটি উড়োজাহাজ হারিয়ে যায়। এ দুই উড়োজাহাজে ৫১ জনের বেশি আরোহী ছিলেন। আজও মেলেনে এ দুই উড়োজাহাজ ও আরোহীদের ধ্বংশাবশেষ।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট



উড়োজাহাজ নিখোঁজ হওয়ার পুরোনো ঘটনাগুলোর একটি অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের হারিয়ে যাওয়া। ১৯৩৭ সালে দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট উড়োজাহাজ ইলেক্ট্রা নিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর উড়ছিলেন সুদক্ষ পাইলট অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট। কিন্তু হঠাৎ তিনি হারিয়ে যান। কোটি কোটি ডলার ব্যয়ে সন্ধান অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৩৯ সালে অ্যামেলিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।