ঢাকা: ইউক্রেন থেকে আলাদা হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেওয়া নিয়ে ক্রিমিয়ার গণভোট থামাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালালেও সফল হতে পারল না যুক্তরাষ্ট্র। রোববার নির্ধারিত সময়ে গণভোট শুরু হবে।
ক্রিমিয়ার গণভোট নিয়ে উত্তেজনা শুধু ক্রিমিয়ায় সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চলেও। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে মস্কোপন্থী ও ক্রিয়েভপন্থীদের মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২জন নিহত হয়েছে।
ইউক্রেনের অবস্থা টালমাটাল হওয়ার পর দেশের পূর্বাঞ্চলে এটিকে দ্বিতীয় ভয়াবহ সহিংসতা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এএফপি জানিয়েছে, খারকিভে ভাঙচুর চালানোর সময় ইউক্রেনীয় জাতীয়বাদীরা গুলি ছুড়ে। এতে এক পথচারী ও এক রুশপন্থী নিহত হয়।
রোববারের গণভোটে দুটি পছন্দের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে ক্রিমিয়ার অধিবাসীদের। পছন্দ দুটি হচ্ছে-
প্রথম. আপনি কি রুশ ফেডারেশনের অংশ হিসেবে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার যোগ দেওয়ার পক্ষে?
দ্বিতীয়. আপনি কি ১৯৯২ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া ও ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে রাখার পক্ষে?
এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিজেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করে ক্রিমিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট। কিন্তু ক্রিমীয় পার্লামেন্টের ঘোষণাকে অবৈধ বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় সরকার।
তিন মাসব্যাপী সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন ছেড়ে পালানোর পর থেকে ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
রুশ নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত ক্রিমিয়ার স্থানীয় সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে সেখানে সৈন্য পাঠায় রাশিয়া। কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রিমিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছে রুশ সৈন্য।
গত বছরের নভেম্বরে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বাণিজ্যিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রপন্থীরা।
বিভিন্নভাবে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হয় ইয়ানুকোভিচের সরকার। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী পরিষদের পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ইয়ানুকোভিচ। এর কিয়েভের অস্থায়ী সরকার ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
বৈধ সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করার অভিযোগ এনে রাশিয়া ইয়ানুকোভিচকে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ইয়ানুকোভিচের ক্ষমতাচ্যুতির পরপরেই ক্রিমিয়া পৃথক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষা করতে সব চেষ্টা চালানোর কথা জানালেও রুশ সৈন্যের উপস্থিতি কোনো কিছুই করতে পারেনি কিয়েভ সরকার।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, সার্বিয়া থেকে কসোভো যেভাবে আলাদা হয়েছে সেভাবেই ক্রিমিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করছে। এতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে না।
কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার জন্য ক্রিমিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার চারটি নৌ বহরের একটির অবস্থান ক্রিমিয়ার সেভাস্তিপলে থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণ সাগরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৪