ঢাকা: ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত গণভোটের প্রাথমিক গণনায় দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক (৯৫.৫ ভাগ) ভোটার ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। কর্মকর্তাদের মতে, বিতর্কিত এ গণভোটের অর্ধেক ভোট গণনা শেষে এ চিত্র দেখা গেছে।
ক্রিমিয়ার নেতা বলেন, তিনি সোমবার রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে আবেদন করতে পারেন। পুতিন আরো বলেন, আমি ক্রিমিয়ার জনগণের মতামতকে শ্রদ্ধা করি।
কিয়েভের অনেক সমর্থকরা এই গণভোট বয়কট করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা এ ‘অবৈধ’ বলে নিন্দা করেছে।
পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হয়।
ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে রুশ সৈন্য রুশ নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত ক্রিমিয়ায় অবস্থান করছে।
এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিজেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করে ক্রিমিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট। কিন্তু ক্রিমীয় পার্লামেন্টের ঘোষণাকে অবৈধ বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় সরকার।
তিন মাসব্যাপী সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন ছেড়ে পালানোর পর থেকে ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
রুশ নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত ক্রিমিয়ার স্থানীয় সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে সেখানে সৈন্য পাঠায় রাশিয়া। কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রিমিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছে রুশ সৈন্য।
গত বছরের নভেম্বরে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বাণিজ্যিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রপন্থীরা।
বিভিন্নভাবে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হয় ইয়ানুকোভিচের সরকার। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী পরিষদের পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ইয়ানুকোভিচ। এর কিয়েভের অস্থায়ী সরকার ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
বৈধ সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করার অভিযোগ এনে রাশিয়া ইয়ানুকোভিচকে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ইয়ানুকোভিচের ক্ষমতাচ্যুতির পরপরেই ক্রিমিয়া পৃথক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষা করতে সব চেষ্টা চালানোর কথা জানালেও রুশ সৈন্যের উপস্থিতি কোনো কিছুই করতে পারেনি কিয়েভ সরকার।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, সার্বিয়া থেকে কসোভো যেভাবে আলাদা হয়েছে সেভাবেই ক্রিমিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করছে। এতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে না।
কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার জন্য ক্রিমিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার চারটি নৌ বহরের একটির অবস্থান ক্রিমিয়ার সেভাস্তিপলে থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণ সাগরে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৪