ঢাকা: ৮ মার্চ উড্ডয়নের ঘণ্টা খানের মধ্যে উধাও হওয়া মালয়েশীয় উড়োজাহাজের সন্ধান এখনো মেলেনি। ২৫ দেশের সন্ধান অভিযান গড়ালো তিন সপ্তাহে, দিন যত যাচ্ছে হতাশা তত বাড়ছে।
সবশেষ উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে ভারত মহাসাগরের পশ্চিমা অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর পার্থের উপকূলে। দুদিন আগে উপগ্রহে পার্থ থেকে ২৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরে ভাসমান দুটি বস্তু শনাক্ত করা গেছে। কিন্তু ওই বস্তু দুটি নিখোঁজ উড়োজাহাজের বিধ্বস্তের ধ্বংসাবশেষ কিনা সেটি নিশ্চিত নয়।
নিখোঁজ হওয়ার পর একে একে ২৫টি দেশে সন্ধান অভিযানে নেমেছে। প্রথমে দক্ষিণ চীন সাগরের ভিয়েতনাম উপকূলে ২৩৯ আরোহীবাহী এমএইচ ৩৭০ ফ্লাইটি বিধ্বস্তের খবর পাওয়া গেলেও এর কোনো প্রমাণ মেলেনি।
এরপর রাডারের তথ্য বিশ্লেষণ করে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞেরা জানতে পারেন, কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী উড়োজাহাজটি উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে গতিপথ পরিবর্তন করেছে। আর রাডার থেকে হারিয়ে যাওয়ার পরও ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা আকাশে উড়েছে।
গতিপথ পরিবর্তন বিষয়টি সামনে আসার পর সন্ধান অভিযান চালানো শুরু হয় মাল্লাকা প্রণালীতে। বলা হয়, মাল্লাকা প্রণালী থেকে হয় উত্তরাঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চলে গেছে উড়োজাহাজটি।
এরপর কাজাখস্তান ও তুর্কমেনিস্তান থেকে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ভারত মহাসাগর রুটের দিকে নজর দিয়ে সন্ধান অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি রেডিও জানায়, বাংলাদেশের ৯টি স্থানসহ বিশ্বের ২৬টি দেশের ৯৩৪টি স্থানে উড়োজাহাজটি অবতরণের সম্ভাবনা থেকে থাকতে পারে।
উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত না ছিনতাই হয়েছে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
এখন পৃথিবীর দুর্গম অংশ ভারত মহাসাগরের অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে ২৫০০ কিলোমিটার দূরে ভাসমান দুটি বস্তুকে উড়োজাহাজের বিধ্বংস্তের চিহ্ন হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ভাসমান এ বস্তু উদ্ধারে বিভিন্ন দেশের উড়োজাহাজ ও জাহাজ অংশ নিয়েছে। নরওয়ের একটি জাহাজ এরইমধ্যে বস্তুর কাছে চলে গেছে।
উড়োজাহাজ উধাওয়ের প্রথম দিকে ছিনতাইয়ের সম্ভাবনা যতটুকু ছিল এখন আর সেভাবে দেখা হচ্ছে না।
উড়োজাহাজের দুই যাত্রী চোরাই পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমণ করেছে-এমন তথ্য প্রকাশের পর ছিনতাই হওয়ার সম্ভাবনাকে বেশি করে দেখেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু ওই দুই যাত্রীর পরিচয় উন্মোচন হওয়ার পর তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উড়োজাহাজের পাইলট ও যাত্রীদের ব্যাপারেও আদ্যোপান্ত খোঁজ-খবর নিয়েছেন মালয়েশীয় ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। কিন্তু যাত্রীদের কারও সম্পর্কে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য এখনও পর্যন্ত জানায় মালয়েশিয়াসহ তদন্ত কাজে নিয়োজিত দেশের কর্মকর্তারা।
ককপিট থেকে ‘অলরাইট, গুডনাইট’(সব ঠিক আছে, শুভরাত্রি) বার্তা নিয়ে সন্দেহের উদয় হলেও সেটির মীমাংসা হয়েছে। জানা গেছে, কো-পাইলট শেষ বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বার্তাটি রেকর্ডকৃত হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৪
** ভারত মহাসাগরেও নেই মালয়েশীয় উড়োজাহাজ
** একাধিকবার গতিপথ পরিবর্তন করেছে উড়োজাহাজটি!