চাঁদের জন্ম কবে? সে প্রশ্নের উত্তর নতুন করে খুঁজছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘ দিন ধরেই বলা হচ্ছে- বিলিয়ন বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গলের মতো আকারের এক গ্রহ পৃথিবী নামের গ্রহটিকে আঘাত হানে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীদের প্রচলিত বক্তব্যে চাঁদের সৃষ্টি সৌরজগত সৃষ্টির তিন কোটি বছর পর।
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খু মাপঝোঁক করে কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে গ্রহ-উপগ্রহ গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল সম্প্রতি এই দাবি করেছেন যে, চাঁদের সৃষ্টি হয়েছে আরও পরে। বর্তমান হিসেবের অন্তত ৬ কোটি বছর পর চাঁদের সৃষ্টি। এই হিসাব বের করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি ‘ভু-তাত্ত্বিক ঘড়ি’ও আবিস্কার করে ফেলেছেন।
ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে গঠিত এই গবেষক দলটি বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে অন্তত ২৫৯টি কম্পিউপার সিমুলেশন করেছেন। প্রাকৃতিক পদ্ধতির অবিকল বিষয়টি কৃত্রিম পদ্ধতিতে পরীক্ষার এই বিশেষ প্রক্রিয়া তাদের কাছে চাঁদের জন্মের ব্যাপারে নতুন তথ্য দিচ্ছে।
বিশ্লেষণের এই কাজটি করার সময় বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ওপর আঘাত হানার সময়টি এবং এর ফলে পৃথিবীতে যেসব পদার্থ যোগ হয় তার পরিমাণের মধ্যে একটি সংযোগ খুঁজে পান।
আর এই সম্পর্কটিই অনেকটা ঘড়ির মতো কাজ করে গবেষকদের সামনে হাজির করে চাঁদ-সৃষ্টির সময়। দ্রুতই গবেষকরা এর নাম দেন ‘ভূ-তাত্ত্বিক ঘড়ি’। তবে তেজষ্ক্রিয়ার ফলে জীবকোষের ক্ষয় পরিমাপ করে নির্ণিত গ্রহ, উপ-গ্রহের বয়সকাল মিলছে না এই ‘ভু-তাত্ত্বিক ঘড়ি’র হিসাব-নিকাষে।
‘রেডিওমেট্রিক হিসাব পদ্ধতিতে বের করে আনা চাঁদের বয়স যখন আমাদের আবিস্কৃত ‘ভূ-তাত্ত্বিক ঘড়ি’ মেনে নিলো না, তখন আমরা ভীষণ উত্তেজনা বোধ করতে থাকি’, বলছিলেন গবেষক দলের প্রধান সেথ জ্যাকবসন।
আমাদের নতুন ঘড়ির হিসেব বলছে সৌরজগত সৃষ্টি হওয়ার কমবেশি নয় কোটি বছর পরে চাঁদের সৃষ্টি, বলেন তিনি।
সৌরজগত সৃষ্টির বয়স ধরা হয় আজ থেকে ৪৬০ কোটি বছর আগে। সেই হিসেবে চাঁদের সৃষ্টি আজ থেকে ৪৫১ কোটি বছর আগে। ফলে আগের হিসেবে নির্ধারিত বয়স থেকে ৬ কোটি বছর কমে গেলো পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান এই সুন্দর উপগ্রহটির বয়স।
বাংলাদেশ সময় ১৩৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৪