ইসলামাবাদ: কয়েক মাস পরপরই আমাকে বিক্রি করে দেওয়া হতো, এক হাত থেকে অন্য হাতে বদল হতাম। আর সেই সঙ্গে বাড়ত নির্যাতনের মাত্রা।
৪৫ বছর বয়সী এই নারীকে করাচি থেকে অপহরণ করা হয়। এক বছর পর তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের ভোবানা তেহসিল থেকে পালাতে সক্ষম হন। পুলিশকে বলা তার মর্মস্পর্শী বর্ণনা বুধবার তুলে ধরেছে দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
আরিফা বলেন, ‘প্রতি কয়েক মাস পরপরই আমাকে নতুন কারও কাছে বিক্রি করে দেওয়া হত। এর ফলে আমি ভুলে যেতে থাকি আগের ঠিকানা। ’
তার বরাত দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, তাকে একজনের থেকে আরেক জনের কাছে বদল করা হয়েছে এবং সারা বছর ধরে চলেছে নির্যাতন।
তিনি বলেন, ‘একদিন আমার স্বামীর অনুপস্থিতিতে তারই বন্ধু সাদ কিছু মিষ্টি নিয়ে বাসায় আসেন। মিষ্টি খেয়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর তিনি আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
পুলিশকে তিনি বলেন, অপহরণের পর তাকে পাঞ্জাব প্রদেশের চিনিয়ত শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নাম পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়।
আরিফা বলেন, ‘সাদ আমাকে জোর করে বিয়ে করে এবং নাম পরিবর্তন করতেও বাধ্য করে। সে তার কাছে আমাকে দুই মাস রাখে। পরবর্তীতে আমাকে ৪০ হাজার টাকায় তার ভাই জহুরের কাছে বিক্রি করে দেয়। ’
এরপরে জহুরও তাকে বিয়ের সনদে সই করায়।
অশ্রুশিক্ত চোখে তিনি বলেন, ‘সে আমাকে ঘরের সব কাজ করাত এবং শিকল দিয়ে তিন মাস বেঁধে রেখেছিল। প্রতিরাতে আমাকে নির্যাতন করত। ’
তিনমাস পর জহুর আমাকে তার বিশ বছর বয়সী ভাগনে আহমেদের কাছে বিক্রি করে। সেখানে আমাকে দুইমাস রাখা হয়।
‘আহমেদ উত্তপ্ত ইস্ত্রি দিয়ে আমার শরীর পুড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু কয়েক মাইলের মধ্যে কেউ না থাকায় সাহায্যের জন্য চিৎকারও করতে পারিনি। পালানোর জন্য বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। এরপর আহমেদ আমাকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুইজন মানুষের কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়। ’
অবশেষে গত সোমবার সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে আরিফা জানালা দিয়ে পালায় এবং সাহায্যের জন্য দৌড়াতে থাকে। আরিফা বলেন, ‘ প্রথম যে বাড়িটা পাই সেখানে আমি সাহায্য চাই। ’
আরিফাকে সাহায্যকারী মাজহার জাপ্পা বলেন, ‘সে আমাদের দরজার দাঁড়িয়ে সাহায্য চাইছিল। আমি তার কাহিনী শুনি এবং পুলিশে খবর দেই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১১