ঢাকা: বুধবার দ্বিতীয় দফায় চলছে ভারতের জাতীয় সংসদ (লোকসভা) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চারটি রাজ্যের ছয়টি আসনে এ ভোটগ্রহণ চলছে।
বুধবার সকাল ৭টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল পর্যন্ত। প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত কোথাও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
নির্বাচন কমিশনের বরাতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নাগাল্যান্ড ও মনিপুরের একটি করে আসনে এবং অরুণাচল ও মেঘালয়ের দু’টি করে আসনে এ ভোটগ্রহণ চলছে।
তবে রাজ্যব্যাপী বনধ চলায় মিজোরাম আসনের নির্ধারিত নির্বাচন ১১ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া, বুধবার ছয়টি আসনের নির্বাচনের সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভার ৬০টি আসনের ৪৯টিরও নির্বাচন সম্পন্ন হচ্ছে বুধবার।
এর আগে, ৭ এপ্রিল প্রথম দফায় আসাম ও ত্রিপুরার ছয়টি আসনে ভোট নেওয়া হয়। আসামের পাঁচটি ও ত্রিপুরার একটি আসনের ভোট গ্রহণকালে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বুধবার দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের পর ১০ এপ্রিল তৃতীয় দফায় সম্পন্ন হবে ১৪টি রাজ্যের ৯২টি আসনের ভোটগ্রহণ। এরপর চতুর্থ দফায় ১২ এপ্রিল তিনটি রাজ্যের পাঁচটি আসনের ভোটগ্রহণ করা হবে।
১৭ এপ্রিল হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনের ভোট। এদিন পঞ্চম দফায় ১৩টি রাজ্যের মোট ১২২টি আসনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এরপর ষষ্ঠ দফায় ২৪ এপ্রিল ১২টি রাজ্যের ১১৭টি আসনের ভোট নেওয়া হবে।
নির্বাচনের সপ্তম দফায় ৩০ এপ্রিল নয়টি রাজ্যের ৮৯টি আসনের এবং অষ্টম দফায় ৭ মে সাতটি রাজ্যের ৬৪টি আসনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
সর্বশেষ ১২ মে তিনটি রাজ্যের ৪১টি আসনের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে নির্বাচনী মহোৎসবের।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। যে কোনো ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (আইএনসি) নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) জোট ও প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) জোট প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে।
আইএনসি ছাড়াও ইউপিএ জোটে রয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)।
অপরদিকে, এনডিএ জোটে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি), তেলেগু ডেসাম পার্টি (টিডিপি), শিব সেনা, স্বাভীমানি পক্ষ ও রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষসহ মোট ২২টি দল।
এছাড়া, নির্বাচনের দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছে নবগঠিত থার্ড ফ্রন্ট। ১৪টি বামপন্থি ও সমমনা দল এই জোটে থেকে নির্বাচন করছে। থার্ড ফ্রন্টের উল্লেখযোগ্য দলগুলো হলো কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্ক্সিস্ট (সিপিএম), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া, রেভোলুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি ও সমাজবাদী পার্টি।
সম্প্রতি কংগ্রেস ও বিজেপিকে কাঁপিয়ে দিয়ে দিল্লির রাজ্য সরকার গঠন করা আম আদমি পার্টিও (এএপি) নির্বাচনে আলোচনায় রয়েছে।
দলীয় ও জোট সূত্রের অনেকটা নিশ্চিত তথ্য, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ’র জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে, ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করলে কাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি দল বা জোটের পক্ষ থেকে।
কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীই টানা দুইবারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উত্তরসূরী হচ্ছেন কিনা এমনটি সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলেও বরাবরই এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন ইউপিএ নেতৃবৃন্দ।
তবে, প্রধানমন্ত্রিত্ব যাকেই দেওয়া হোক, দেশের জনগণসহ পুরো বিশ্বের নজর এখন ভারতের দিকে। কারণ, আগামী এক মাসের মধ্যেই জানা যাবে, ক্রমেই বিশ্ব পরাশক্তি হয়ে ওঠা ভারতের পরবর্তী সরকার কারা গঠন করছে, তৃতীয় দফায় ইউপিএ-নাকি দীর্ঘ বিরতির পর এনডিএ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৪