ঢাকা: তীব্র খাদ্য সংকটে পড়া থেকে বিশ্ব আর মাত্র ৩৬ বছর দূরে! ২০৫০ সালের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি।
সংস্থাটির খাদ্য নিরাপত্তা অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে।
ইউএসএআইডি’র জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ফ্রেড ডেভিসের মতে, মনুষ্য সভ্যতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পর্যাপ্ত ভূমি, পানি ও জ্বালানির অভাবে মানুষকে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়তে হবে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে সম্প্রতি সমাপ্ত উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের কৃষি সাংবাদিকদের এক সম্মেলনের পর ডেভিস জানান, বর্তমান সময়ে জ্বালানি নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, ২০৫০ সাল নাগাদ খাদ্যই এ অস্থিতিশীলতার প্রধান কারণ হয়ে উঠবে।
ডেভিসের মতে, চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের জনসংখ্যা ৩০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৯০০ কোটিতে। আর জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে ৭০ শতাংশ।
তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য নিশ্চয়তা, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও স্থূলতা-একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
ডেভিস আরও জানান, বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী প্রতি একজনে ৮ জন দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিতে ভুগছেন। আর দীর্ঘমেয়াদী দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকা ৭৫ শতাংশ মানুষ বাস করছে চীন, ভারত, ব্রাজিল ও ফিলিপাইনের মতো মধ্য আয়ের দেশগুলোতে।
ডেভিস জোর দিয়ে বলেন, কাঁচামালের সংকট বিশ্ব খাদ্য ব্যবস্থায় ব্যাপক চাপ ফেলবে। এক্ষেত্রে বর্তমান সময়কার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে ২০৫০ সালের চাহিদা পূরণ করা কতটুকু সম্ভব হবে সেটা অনেক বড় প্রশ্ন। চলমান উৎপাদন অনুযায়ী চলতে থাকলে সংকট কোনোভাবেই কাটানো সম্ভব হবে না।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনই কমে গেছে প্রতিবছরে ১ দশমিক ২ শতাংশ করে। এ বিচারে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর অবস্থা কী-তা ভাবাই উদ্বেগের।
তবে, বিশ্বের করণীয় নির্ধারণে পরামর্শ দিয়ে ইউএসএআইড’র এ বিজ্ঞানী বলেন, মধ্য শতাব্দীর সম্ভাব্য খাদ্য সংকট কাটাতে পর্যাপ্ত প্রযুক্তি ও কাঁচামালের প্রয়োজন হবে। ঠিক সমানভাবে মাঠপর্যায়ের কৃষকদেরও এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে সমানভাবে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৪