ঢাকা: পাকিস্তানের জনপ্রিয় জিও টিভি নেটওয়ার্কের তিনটি স্যাটেলাইট চ্যানেলের লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করাচিতে পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটির (পেমরা) কয়েক সদস্য এক বৈঠকে মিলিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এরপরই জিও টিভি নেটওয়ার্কের জিও নিউজ, জিও এন্টারটেইনমেন্ট ও জিও টেজ চ্যানেলের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
অপরদিকে, পেমরার অন্য সদস্যরা এই মঙ্গলবারের সন্ধ্যার সভাকে ও এর গৃহীত সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, বৈঠকটিই ছিল অবৈধ এবং এর সিদ্ধান্তও ভিত্তিহীন।
পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটির (পেমরা) এ সমস্যা শুরু হয় যখন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পেমরার সদস্য ইসরার আব্বাসী, মিয়া শামস ও ফারিহা ইফতেখার জিও টিভি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অশালীন কর্তাবার্তা বলেন এবং এরপর তারা পেমরা ভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের জানান যে, জিও টিভি নেটওয়ার্কের তিনটি চ্যানেলের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আব্বাসী সাংবাদিকদের জানান, জিও টিভি নেটওয়ার্কের তিনটি চ্যানেলের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার কেন্দ্র সিল করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী ২৮ মে অনুষ্ঠিতব্য পেমরার সভায় গৃহীত হবে। ওই সভায় সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার বৈঠকে সরকারি সাত প্রতিনিধির কেউই উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র চার প্রদেশের বেসরকারি প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আব্বাসী সাংবাদিকদের বলেন, কর্তৃপক্ষ অন্তত ১০ হাজার মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, জিও এন্টারটেইনমেন্টের মর্নিং শো তাদের মূল্যবোধকে আহত করে।
তিনি আরো বলেন, এ ছাড়াও ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জিও নিউজ সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, পাকিস্তান সরকারের জনসংযোগ পরিদফতর থেকে সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবারের বৈঠকটি নিয়ম না মেনে ডাকা হয়েছিল এবং এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, পেমরা রুলস ২০০৯-এর ৩(৪) ধারা অনুযায়ী, এর চেয়ারম্যান বা এর অন্তত সাত সদস্য সভা ডাকতে পারেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যা হয়েছে, সেটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক এবং মাত্র পাঁচ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে পেমরার এক মুখপাত্র জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার বৈঠকের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি ছাড়া এ ধরনের বৈঠকে হতে পারে না।
তিনি আরো জানান, ৯ মে’র বৈঠক অনুসারে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পরই মাত্র পেমরার বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী দৈনিক ডনকে একই মতামত ব্যক্ত করে বলেন, দুই-তৃতীয়াংশের মতামত ছাড়া বৈঠক ডাকা যায় না।
বর্তমানে পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটির (পেমরা) সদস্যদের মধ্যেই মতবিরোধ চলছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলগুলো অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় কাটাচ্ছে।
এদিকে, হামিদ মীরকে গুলি করার পর তিনি এ জন্য পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে দায়ী করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই জিও টিভি নেটওয়ার্কের লাইসেন্স নিয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৪/আপডেটেড: ১১৫৫ ঘণ্টা