ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ ভারতের নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় ৬টায় (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৬টা) নয়াদিল্লিতে প্রেসিডেন্ট ভবনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে (ফোরকোর্ট) শপথ নেবেন তারা।
ইতোমধ্যে শপথ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন দেশি-বিদেশি অতিথিরা। এদের মধ্যে রয়েছেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান কিংবা তাদের প্রতিনিধিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেতারা। উপস্থিত হয়েছেন দেশটির সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিকরা। এছাড়া, উপস্থিত হয়েছেন রুপালি পর্দার কলাকুশলীরাও।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, মোদী ও তার সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতোমধ্যে ফোরকোর্টে উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শপথ অনুষ্ঠানে থাকছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে ও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও। এছাড়া, থাকছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং, নেপালের প্রধানমন্ত্রী শুশিল কৈরালা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামেনসহ আমন্ত্রিত বিশ্ব নেতারা।
দেশি অতিথিদের মধ্যে শপথ অনুষ্ঠানে থাকছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীসহ দলটির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা। উপস্থিত থাকছেন সাবেক কয়েকজন প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীও।
প্রথা অনুযায়ী দরবার হলেই শপথ হওয়ার কথা। কিন্তু চন্দ্রশেখর এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো মোদীর ইচ্ছানুযায়ী তার শপথ হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ভবনের ফোরকোর্টেই। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন চার হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি অতিথি। প্রেসিডেন্ট ভবনে একসঙ্গে এত অতিথি সমাগম এর আগে হয়নি। দরবার হলে এতজনের জায়গা হবে না বলেই ফোরকোর্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এখানেই নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, নতুন মন্ত্রিপরিষদে থাকছেন-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে সুষমা স্বরাজ, অর্থমন্ত্রী পদে অরুণ জেটলি। তবে অরুণ জেটলিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে। এছাড়া, কৃষি ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী পদে বেঙ্কাইয়া নাইডু, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী পদে নিতিন গড়কড়ি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী পদে রবিশঙ্কর প্রসাদ বা স্মৃতি ইরানি, পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ারম্যান (মন্ত্রীর সমমান) পদে অরুন শৌরি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদে হর্ষবর্ধন শপথ নিতে পারেন।
এছাড়া, মোদীর সরকারে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে থাকছেন- মানেকা গান্ধী (পরিবেশ কিংবা নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রণালয়), অনন্ত কুমার, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, অশোক রাজু (টিডিপি),অনন্ত গিতে (শিবসেনা), চন্দ্রবাবু নাইডুও (টিডিপি)।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মন্ত্রিসভায় বাবুল সুপ্রিয়ের নাম উচ্চারিত হলেও তিনি মন্ত্রীপদে থাকছেন না বলেই জানা গেছে। এছাড়া, মন্ত্রিত্বে থাকছেন না মুরলি মনোহর যোশী ও লালকৃষ্ণ আদভানি। অবশ্য, লোকসভার স্পিকার পদে নাম আসছে সুমিত্রা মহাজন ও কারিয়া মুন্ডার।
জি নিউজের খবর অনুযায়ী রাজনাথ মন্ত্রীর দফতরে ব্যস্ত হয়ে গেলে বিজেপির নতুন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করবেন জেপি নাড্ডা।
তবে সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মোদীর মন্ত্রিসভায় ৪৪ জন সদস্য থাকতে পারেন। এদের মধ্যে ২৩ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১০ জন স্বতন্ত্র মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হতে পারেন।
এনডিটিভি সূত্রের মন্ত্রিসভার তালিকায় স্থান পেয়েছেন- রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলি, নিতিন গড়করি, সদানন্দ গৌড়া, সুষমা স্বরাজ, বেঙ্কাইয়া নাইডু, উমা ভারতী, নাজমা হেপতুল্লাহ, গোপীনাথ মুন্ডে, রাম বিলাস পশ্বন, কালরাজ মিশ্র, মানেকা গান্ধী।
মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন- হার্ষিম্রাট কৌড় বাদল, গজপতি রাজু, অনন্ত গিতে, অনন্ত কুমার, রবিশঙ্কর প্রসাদ, নরেন্দ্র সিং তোমার, জৌল ওরাম, থর চন্দ গেহলত, স্মৃতি ইরানি, রাধা মোহন সিং ও হর্ষবর্ধন।
তবে, শপথ অনুষ্ঠানের পরই জানা যাবে মোদীর সরকারে কারা দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৪