ঢাকা: পাকিস্তানে নিজের পছন্দমতো বিয়ে করায় বাপ-ভাইয়ের হাতে জীবন দিতে হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা পারভিনকে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে আদালত চত্বরে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয় তাকে।
বিশ্বের নামিদামি সব গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয় নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের খবর। দেশ-বিদেশে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
এরই প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বৃহস্পতিবার পাথর নিক্ষেপ করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি এ ঘটনায় পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আজ সন্ধ্যার মধ্যে ঘটনা সম্পর্কে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনা সম্পর্কে নিহত ফারজানা পারভিনের স্বামী ইকবাল বিবিসিকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলের সামনে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফারজানা হত্যা দেখছিল। কিছুই করেনি।
এ ঘটনায় ফারজানার বাবা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তবে অন্যরা এখনও গ্রেফতার হয়নি।
ফারজানার মতো প্রতিবছর শত শত নারীকে তথাকথিত পরিবারের ‘মর্যাদা রক্ষায় হত্যা’ করা হয়। ২০১৩ সালে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটে ৮৬৯টি।
নওয়াজ শরিফ বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে লাহোরের ওই বর্বর হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে চরম রক্ষণশীল পাকিস্তানে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ বা পারিবারিকভাবে বিয়ের রীতি প্রচলিত আছে। যারাই এর বাইরে গিয়ে বিয়ে করছেন তাদেরকে জীবন দিয়ে এর মূল্য দিতে হচ্ছে।
লাহোরের একটি ছোট্ট গ্রামে থাকত ফারজানা পারভিনের পরিবার। পরিবারের অসম্মতিতে ইকবালকে বিয়ে করেন ফারজানা। এজন্য তার পরিবার ইকবালের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে অপহরণ মামলা করে।
মামলা লড়ার জন্য মঙ্গলবার ফারজানা স্বামী নিয়ে আদালতে আসেন। আদালতে থেকে বের হওয়ার সময় ফারজানার পরিবার তাকে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে। ফারজানা তাদের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করলে তাকে মাটিতে ফেলে ইট দিয়ে মাথা থেতলে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে মারা যান ফারজানা। পাশে পুলিশ কর্তব্যরত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৪