ঢাকা: সম্প্রতি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রতিবেশী নেপাল ঘুরে এলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদী। তার এই সফরে নেপাল-ভারত সম্পর্কে জমে থাকা বরফ গলতে শুরু করেছে বলে দাবি করছে ভারত সরকার।
তবে এই নেপাল সফরে সবচেয়ে আলোড়ন তুলেছে কাঠমাণ্ডুর মন্দিরে দেবতার উদ্দেশ্যে মোদীর ৫ টন ঘি ও চন্দন কাঠ অর্ঘ্য নিবেদনের ঘটনা।
নিন্দুকরা বলছে, মন্দিরে পোড়ানো মোদীর এই বিপুল পরিমাণ ঘি আর চন্দন কাঠের উত্তাপের প্রভাবেই নাকি গলে গেছে ভারত-নেপাল সম্পর্কের জমে থাকা বরফ!
গত ১৭ বছরের মধ্যে এটাই কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম নেপাল সফর। দুই দিনের সফরে প্রতিবেশী দেশটিতে মোদী পান উষ্ণ অভ্যর্থনা। সে দেশের পার্লামেন্টে দ্বিতীয় ভিনদেশি রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। পাশাপাশি নেপালের জন্য ঘোষণা করেন ১ বিলিয়ন ডলারের স্বল্প সুদের ঋণ।
এছাড়া রাজধানী কাঠমাণ্ডুর বিখ্যাত পশুপতিনাথ মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে তিনি অর্ঘ্য দেন দুই হাজার চারশ’ কেজি ঘি এবং আড়াই টন চন্দন কাঠ।
জানা গেছে, এক কেজি চন্দনকাঠের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ১৬ হাজার রুপি। সব মিলিয়ে আড়াই হাজার কেজি চন্দনকাঠের দাম ৪ কোটি রুপি। এছাড়া ৩৯০ টাকা কেজি করে দুই হাজার চারশ’ কেজি ঘি এর দাম দাঁড়ায় ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে মন্দিরে মোদীর উৎসর্গকৃত ঘি আর চন্দনকাঠের খরচ দাঁড়ায় ৪ কোটি নয় লাখ রুপি।
মন্দিরে মোদীর এই ঘি আর চন্দন কাঠ চড়ানোর ঘটনায় ভারতে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, ঘি আর চন্দনকাঠ বাবদ এই বিপুল অঙ্কের খরচের উৎস কোথায়। প্রধানমন্ত্রীর অফিসও নাকি এই খরচের উৎস এখনও স্পষ্ট করেনি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮৩ রুপিকে ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে দেখান মোদী। পাশাপাশি গুজরাটের গান্ধীনগরে তার স্থাবর সম্পত্তির মূল্য দেখানো হয়েছে ১ কোটি রুপি।
এখন প্রশ্ন হলো, মন্দিরে ঘি আর চন্দন কাঠের খরচ যদি মোদী নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকেই যোগান তবে এত অল্প সময়ে এই বিপুল অর্থ তিনি পেলেন কোথায়।
আবার যদি রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে এর খরচ যোগানো হয়, তবে প্রশ্ন হলো-ভারতীয় জনগণের ট্যাক্সের টাকায় প্রধানমন্ত্রী মন্দিরে এই চন্দনকাঠ ও ঘি চড়াতে পারেন কি না।
এসব নিয়েই ভারতের রাজনৈতিক মহলে এখন মুখরোচক আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৪