ঢাকা: ইরাকের সুন্নি সম্প্রদায়পন্থি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএসআইএস) বিরুদ্ধে হামলা পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ইরাকের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শহর মসূলের ৮৮ কিলোমিটার পূর্বের শহর ইরবিল নিয়ন্ত্রণে আইএসআইএসের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন বিমান বাহিনী। ইরবিল দেশটির স্বায়ত্বশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের রাজধানী।
পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানায়, ইরবিলের কাছে জঙ্গিদের সামরিক অবস্থান (মোবাইল আর্টিলারি) লক্ষ্য করে দু’টি এফ/এ-১৯ যুদ্ধবিমান ৫০০ পাউন্ড লেজার গাইডেড বোমা নিক্ষেপ করেছে।
পেন্টাগনের প্রেসসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল জন কিরবি বলেন, আইএসআইএসের জঙ্গিরাও ইরবিল নিয়ন্ত্রণে লড়াইরত কুর্দি সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন রকমের ভারি অস্ত্র (আর্টিলারি) ব্যবহার করছে।
আইএসআইএস নামে পরিচিত ইরাকের সুন্নি সম্প্রদায়পন্থি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল এলাকা দখলে নিয়েছে।
গত জুনে ইরাকের অন্যতম বৃহৎ শহর মসুলসহ বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নেয় আইএসআইএস। চলতি সপ্তাহের শুরুতে খ্রিস্টান অধ্যুষিত শহর কারোকোশও দখলে নেয় সুন্নি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এ ভয়ে শহর ছেড়ে পালায় এক চতুর্থাংশ খ্রিস্টান।
মূলত খ্রিস্টান অধ্যুষিত অঞ্চলে আইএসআইএসের তৎপরতার চোখে পড়ার পরই টনক নড়ে ওবামা প্রশাসনের।
বৃহস্পতিবারই ইরাকে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় উত্তরণে পেন্টাগনকে বিমান হামলার অনুমোদন দেন দিয়ে তিনি ঘোষণা দেন, আইএসআইএস যদি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা ইরাকে সংখ্যালঘুদের হত্যা করতে থাকে তবেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চলবে।
পেন্টাগন সূত্র বলছে, ইরাকের খ্রিস্টান অধ্যুষিত কারাকোশ অঞ্চলে বিদ্রোহীদের হামলার কারণে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষিতে এ হামলা চালানো হচ্ছে।
অবশ্য আরেকটি ইরাকযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জড়াতে চায় না উল্লেখ করে ওবামা জানিয়ে দেন, ইরাকে আবারও সৈন্য পাঠানো হবে না।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউজে এক ভাষণে ওবামা বলেন, আইএসআইএস যোদ্ধাদের কারণে সিনজাই প্রদেশে আটকে পড়া ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের খ্রিস্টানদের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্র উড়োজাহাজ থেকে খাদ্য ও পানি ফেলেছে।
ওবামা বলেন, বিশ্বে যখনই কোনো সঙ্কট সৃষ্টি হয় তখনই যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে না বা করা উচিত না। তবে ‘বিরাট আকারে’ সহিংসতা হলে যুক্তরাষ্ট্র ‘অন্ধ’ হয়ে থাকতে পারে না। বিশেষ করে ইরাকি সরকার যখন সাহায্য প্রার্থনা করে।
তিনি বলেন, গণহত্যা রোধে আমরা দায়িত্ব, নিষ্ঠা ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আইএসআইএস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চলবে। ইরাকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি ‘আধুনিকতম’ বাহিনীকে সাহায্য করার দায়িত্ব মার্কিন সরকারের।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৪