ওয়াশিংটন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসে পদার্পণ করলেন। বিপি নিয়ে বারাক ওবামার মন্তব্য দুই নেতার বৈঠকে প্রভাব ফেলবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
গভীর পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকা এই সফরের সময়ে আটলান্টিকের দুই পাশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে যে, আফগানিস্তানের যুদ্ধে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হবে নাকি ব্যর্থ হবে। দুই দেশেরই রক্ত ঝরছে ওই যুদ্ধে।
হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে অনুষ্ঠেয় বৈঠক ও সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তরুণ এই দুই নেতা পাশাপাশি বসবেন।
গত মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে ওবামা ও ক্যামেরন মেরিন ওয়ান হেলিকপ্টারে একসঙ্গে ভ্রমণ করেছেন। গত মে মাসে ইংল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ক্যামেরন ও ওবামা ঘন ঘন টেলিফোনে কথাও বলেছেন।
হোয়াইট হাউসে ক্যামেরনের প্রথম সফর এই দুই ঐতিহাসিক মিত্র-রাষ্ট্রের ভবিষ্যতে ‘বিশেষ সম্পর্ক’ গড়ার ইঙ্গিত বহন করে।
আশা করা হচ্ছে, ব্রিটিশভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বিপিকে নিয়ে দুই নেতাকেই কঠিন সব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। মেক্সিকো উপসাগরে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় বিপি রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। হোয়াইট হাউসও জোর দিয়ে জানায়, ক্যামেরনের জন্যও বিপি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র রবার্ট গিবস বলেন, “আমার মনে হয় না, এটা (বিপি’র ঘটনা) আলোচনায় কোনো খারাপ প্রভাব ফেলবে। প্রেসিডেন্ট আশা করেন, এই বিপর্যয়ের ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে বিপি। আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রীও (ক্যামেরন) এমনই বলেছেন। ”
হোয়াইট হাউসের তীè পর্যবেক্ষণে রয়েছে বিপি। গভীর সমুদ্রে বিস্ফোরিত এই তেলকূপটি বন্ধ করতে চায় ওবামার প্রশাসন।
ডেভিড ক্যামেরন টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, “অবশ্যই আমরা বিপি নিয়ে আলোচনা করব। কেবল ব্রিটেনের জন্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি নয়, যুক্তরাষ্টের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের মতোই যুক্তরাষ্ট্রেরও এতে হাজার হাজার কর্মী কর্মরত রয়েছে। ”
ওবামা ও ক্যামেরন আফগানিস্তানের যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করবেন। সেখানে নয় বছর ধরে চলা যুুদ্ধে দেশ দুটির রক্তক্ষয়ের পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছে।
আগামী বছর জুলাইয়ে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু করতে চান ওবামা। এরইমধ্যে ক্যামেরনও ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সেনাদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন।
রাজনৈতিকভাবে ওবামা ও ক্যামেরনের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। বৃহৎ পরিসরে সরকার গঠনের বিরোধিতা করেন ক্যামেরন, আর ওবামা তাঁর দেশের অর্থনীতিতে গভীর হস্তক্ষেপ করেছেন। দুই জনই ব্যবহারিক। গত দুইশ বছরের ইতিহাসে ক্যামেরন ব্রিটেনের কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। আর ওবামা তরুণদের ভোটেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
ক্যামেরন সম্পর্কে ওবামার মন্তব্য, “আমি তাঁকে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমান, নিবেদিত ও কার্যকর নেতাই মনে করি এবং আমরা তাঁর সঙ্গে ফলপ্রসূ কাজ করতে যাচ্ছি। ”
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়; ১২৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১০