ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইসলামাবাদে অচলাবস্থা

সন্ধ্যার মধ্যেই নওয়াজের পদত্যাগ দাবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৪
সন্ধ্যার মধ্যেই নওয়াজের পদত্যাগ দাবি ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: পাকিস্তানের রাজনৈতিক অচলাবস্থা ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। সাবেক ক্রিকেটার ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খান এবং বিতর্কিত আধ্যাত্মিক নেতা ও আওয়ামী তেহরিকের (পিএটি) প্রধান তাহির উল ক্বাদরির নেতৃত্বাধীন ‘আজাদি মার্চ’ বুধবার ভোরে রাজধানী ইসলামাবাদের রেড জোনে (সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা) পৌঁছেছে এবং এখন পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছে।



সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসের এই রেড জোনে অবস্থানরত অবস্থানরত বিক্ষোভ থেকে বুধবার সন্ধ্যারর মধ্যেই মুসলিম লিগের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফসহ তার সরকারকে পদত্যাগের সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।

এ সময়ের মধ্যে সরকার পদত্যাগ না করলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ইমরান, আর এমপি-মন্ত্রীদের জিম্মি করার নির্দেশ দিয়েছেন ক্বাদরি।

সরকারের উদ্দেশে হুমকি দিয়ে ইমরান বলেন, বুধবার সন্ধ্যার মধ্যেই পদত্যাগ না করলে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গুড়িয়ে দেওয়া হবে। কেউ জনতাকে ঠেকাতে পারবে না।

আরও এক ধাপ সামনে এগিয়ে ক্বাদরি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কাউকে বের হতে (পার্লামেন্ট থেকে) দেওয়‍া হবে না, ঢুকতেও দেওয়া হবে না। এমনকি মসজিদ থেকেও না।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রেড জোন ও এর আশপাশে বুধবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার ইমরান ও ক্বাদরি সমর্থক অবস্থান করছিলেন।

ইমরান-ক্বাদরিকে আদালতে তলব
এদিকে, সংবিধানবহির্ভূতভাবে সরকারের পদত্যাগ দাবি ইম‍রান খান ও তাহির উল ক্বাদরিকে বৃহস্পতিবার আদালতে তলব করা হয়েছে।

মুলতান বার অ্যাসোসিয়েশনের দায়ের করা একটি পিটিশনের শুনানি শেষে তাদের ওপর এ সমন জারি করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির বেঞ্চ।

এছাড়া, চলতি বিক্ষোভের ব্যাপারে আইন সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকেও জবাব দিতে নোটিশ জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট

ইমরান-ক্বাদরির ওপর অসন্তুষ্ট অন্য বিরোধী দলগুলো
গত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে নওয়াজ শরিফ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নতুন নির্বাচন চেয়ে ইমরান-ক্বাদরিরা আন্দোলনে নামলেও তাদের এ দাবিতে সংহতি নেই অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের। এমনকি ইমরান-ক্বাদরিরা অন্য বিরোধী দলগুলোকে রাজপথে নামার আহ্বান জানালেও তারা উল্টো ইমরান-ক্বাদরিদেরই আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিরোধী দলগুলো চাইছে না, ইমরান-ক্বাদরির এ বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কোনো অসাংবিধানিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক।

সেনাবাহিনীর ভূমিকা অস্পষ্ট
স্থানীয় সংব‍াদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পিএটি ও পিটিআই সমর্থকদের বিক্ষোভ ইসলামাবাদের রেড জোন অভিমুখে রওয়ানা দিলে ওই এলাকার সুরক্ষায় ৭শ’ সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়।

সেনাবাহিনীও বিক্ষোভকারীদের সংসদ, সরকারি ভবন ও রেড জোটে অস্থিরতা সৃষ্টির ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

কিন্তু এ সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালনকালেই ভোরে রেড জোনে প্রবেশ করে সংসদ ভবনের বাইরে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় বিক্ষোভকারীদের কোনো রকমের বাধা দিতে দেখা যায়নি সেনা সদস্যদের।

পাকিস্তানের ইতিহাসের দুই তৃতীয়াংশ সময়ই সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে গেছে বলে ইমরান-ক্বাদরিদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদজুড়ে অজানা শঙ্কা ডানা মেলছে। বিশেষ করে নওয়াজের পদত্যাগের ঘোষণা আসা না পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের অবস্থান, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলার ঘোষণায় এ শঙ্কা বেড়ে চলেছে দ্রুত।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।