ত্রিপোলি: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে এমন খবর ছড়িয়েছে, মুয়াম্মার গাদ্দাফি গোপনে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আঁতাত করার চেষ্টা করছেন। তাকে যদি তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সহায়-সম্পত্তি নিয়ে পালানোর সুযোগ দিলে তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন।
বুধবার সকালে কায়রোতে হোসনি মোবারকের একটি ব্যক্তিগত বিমান অবতরণ করার পর যেমন মোবারকের পালানোর আভাস পাওয়া গিয়েছিল, এখানে তেমনই কিছু পাওয়া যাচ্ছে।
তাই এখন দুটো প্রশ্ন সামনে এসেছে। গাদ্দাফি কি শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়বেন? আর যদি তিনি পদত্যাগ করেনই, তাহলে কোথায় যাবেন গাদ্দাফি?
এটা নিশ্চিত যে, গাদ্দাফি এত সহজে সরে দাঁড়ানোর লোক নন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তিনি লিবিয়ার মাটিতেই শহীদ হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমি লিবিয়াতেই আছি’।
ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির ডেভিড পোলক বলেন, ‘গাদ্দাফিকে যারা চেনেন তারা জানেন, গাদ্দাফি খুবই নির্মম প্রকৃতির লোক। এই মুহূর্তে লিবিয়ার যা পরিস্থিতি তাতে মনে হয় না তিনি রণে ভঙ্গ দেবেন। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাবেন। তাই লিবিয়ার সামনের পরিস্থিতি হবে খুবই ভয়াবহ। এমনকি তা সোমালিয়ার মতো গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারে’।
পোলক আরো বলেন, ‘বিদ্রোহীদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির দিকেও যাবেন না গাদ্দাফি। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও তা না করার জন্য গাদ্দাফির প্রতি আহবান জানিয়েছেন। ’
কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, গাদ্দাফি তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট জাইন আল-আবেদিন বেন আলির মতো সৌদি আরবে আশ্রয় নিতে পারেন। কিন্তু সে সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। কারণ গাদ্দাফি কয়েক বছর আগে সৌদি বাদশাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর সৌদি আরবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভালো না। আর এখানে প্রসঙ্গটা যেহেতু গাদ্দাফির, বাদশাহ তা করবেন বলেও মনে হয় না।
গাদ্দাফি একজন একশ ভাগ বেদ্ঈুন। তিনি নারী দেহরক্ষী নিয়ে চলা ফেরা করেন। এখনও তাঁবু খাটিয়ে ঘুমান। সুতরাং গাদ্দাফি হয়ত শেষ পর্যন্ত লিবিয়ায় থেকে যাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১১