ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে চরম সংকট, ব্যাপক তেজষ্ক্রিয়তার আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১১
ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে চরম সংকট, ব্যাপক তেজষ্ক্রিয়তার আশঙ্কা

ঢাকা: ভূমিকম্প ও সুনামিতে আঘাত পাওয়া ফুকুশিমা-১ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মঙ্গলবার আরও সংকটময় দশায় পৌঁছেছে। আরও দুটি চুল্লিতে হাইড্রোজেন বিস্ফোরণের পরে বিস্তৃত আকারে তেজষ্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।



এরইমধ্যে গণমাধ্যমগুলোয় খবর বেরিয়েছে, জাপানের রাজধানী টোকিওর আবহম-লসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তেজষ্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান, চুল্লির আশপাশের এলাকার অধিবাসীদের ঘরের ভেতরেই অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছেন। জাপানের সংবাদ মাধ্যম কিয়োদো নিউজ জানিয়েছে, এক বছরে মানুষ যে পরিমাণ তেজষ্ক্রিয় সইতে পারে তার চেয়ে ৪০০ গুণ বেশি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে তিন নম্বর চুল্লির আশপাশে। এরমধ্যে চারপাশে ২০ বর্গ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে অধিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কান সতর্ক করে বলেন, চুল্লি থেকে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। তিনি সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকারও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘জানালা-দরজা বন্ধ, এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন। আপনি অন্যত্র সরে গেলেও সেখানে নিজেকে যতোটা পারা যায় ঢেকে রাখুন। মুখোশ ব্যবহার করুন। ’

ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ান প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং চুল্লির শীতলীকরণ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাকে ঘিরে গত কয়েক দশকের মধ্যে জাপান সবচেয়ে বড় পরমাণু সংকটের মুখে পড়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রায় ৫০ জন টেকনিশিয়ান ফুকুশিমা পরমাণু স্থাপনার শীতলীকরণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ করছে। তবে অত্যধিক তেজষ্ক্রিয়তার কারণে তাদের জন্য কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাপানের সরকার এরইমধ্যে ক্রমবর্ধমান এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।

জাপানের মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব ইউকিয়ো এদানো জানান, তারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বাকি দুটি চুল্লির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। মঙ্গলবার পাঁচ ও ছয় নম্বর চুল্লির তাপমাত্রার বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, এক ও তিন নম্বর চুল্লির শীতলীকরণ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে সমুদ্রের পানি পাম্প করে এগুলো ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে। তবে দুই নম্বর চুল্লিটি এখনো অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান তিনি। সোমবার এ চুল্লিটিতে হাইড্রোজেন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার দুপুরে জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থা জানায়, ৮ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ও ৩১ ফুট সুনামিতে এ পর্যন্ত দুই হাজার চারশ ৭৫ জন নিহত, তিন হাজার ছয়শ ১১ জন নিখোঁজ রয়েছে। তবে দেশটির এনএইচকে টেলিভিশনে বলা হয়েছে, তিন হাজার মানুষ নিহত ও ১৫ হাজার নিখোঁজ রয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাপান সরকার জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জন্য মার্কিন পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সহায়তা চেয়েছে। কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে পটাশিয়াম আয়োনাইড বিতরণ শুরু করেছেন, এতে শরীরে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।