ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

একই মাত্রার ভূমিকম্প যুক্তরাষ্ট্রে হলে আরও বিপর্যয়

আন্তর্জাকি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১১
একই মাত্রার ভূমিকম্প যুক্তরাষ্ট্রে হলে আরও বিপর্যয়

ঢাকা: জাপানের একই মাত্রার ভূমিকম্প যুক্তরাষ্ট্রের কালিফোর্নিয়ার উপকূলে আঘাত হানলে সেখানে অবস্থিত পরমাণু চুল্লিগুলোর মধ্যে কমপক্ষে চারটি আক্রান্ত হতো। আর এতে সৃষ্ট প্রাণঘাতী তেজস্ক্রিয় পদার্থ পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ত।

এর ভয়াবহতা চেরনোবিলকেও ছাড়িয়ে যেতে পারত বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।

এ কথা জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের যুক্তরাষ্ট্র শাখা এবং নিউকিয়ার ইনফরমেশন অ্যান্ড রিসোর্স সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হারভে ওয়াসারম্যান।

জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানা ৮দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানীর পাশাপাশি পরমাণু চুল্লিগুলোও হুমকির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, এ বিস্ফোরণের ফলে উপকূল জুড়ে যে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে তা চেরনোবিলের মতো ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও।

হারভে বলেছেন, ‘কালিফোর্নিয়ার সান ওনোফার এবং ডিয়াবলু ক্যানিয়নের পরমাণু চুল্লি দুটির নকশা জাপানের ভূমিকম্পের মতো আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা সম্পন্ন নয়। এখানকার চারটি চুল্লিতেই যথেষ্ট ক্রুটি রয়েছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় হচ্ছে চারটিই উপকূলের তুলনামূলক নীচু স্থানে অবস্থিত। সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই প্রবল।

তিনি আরও বলেন, ‘সান ওনোফার সান দিয়েগো এবং লসঅ্যাঞ্জেলেসের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। এখানে একটি বা দুটি চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে তা পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর জানমালের অপরিমেয় ক্ষতিসাধন করবে। এবং পরক্ষণেই তা বাকি দক্ষিণাঞ্চল এবং কালিফোর্নিয়ার কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়বে। ’

১৯৮৬ সালের চেরনোবিল পরমণু বিস্ফোরণকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হয়। চুল্লিটির সবচেয়ে কাছাকাছি ৮০ কিলোমিটার দূরের ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে এবং তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে পরবর্তী কয়েক বছরে মোট ৯ লাখ ৮৫ হাজার লোক মারা যান।

কিন্তু ডিয়াবলু ক্যানিয়ন থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে জনবসতিপূর্ণ সান লুইস অবিসপো। অপরদিকে সান ওনোফার চারপাশ ঘিরে গড়ে উঠছে শহরতলী।

চেরনোবিলের পরমাণু চুল্লির আকৃতি ডিয়াবলু ক্যানিয়নের দুটি চুল্লির সমান এবং সান ওনোফারের দুটির চেয়ে বড়। তবে এদের সম্মিলিত বিকিরণ কিন্তু চেরনোবিলকে ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান হারভে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন আরো অনেক পরমাণু চুল্লি আছে যেগুলো ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত।

এতোসব আশঙ্কা সত্ত্বেও সম্প্রতি ওবামা প্রশাসন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আরও পরমাণু চুল্লি স্থাপনে তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলার ঋণ সুবিধা দিতে কংগ্রেসকে অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।