ঢাকা: সম্প্রতি ক্যান্সার চিকিৎসায় যুগান্তকারী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। শরীরের যে স্থানটি ক্যান্সার আক্রান্ত হবে ঠিক সেখানেই ওষুধ প্রয়োগ করে চিকিৎসা সম্ভব বলে তারা জানান।
এ সংক্রান্ত প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে দেখা যায়, ক্যান্সার বিধ্বংসী ওষুধ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অকার্যকর। কারণ ক্যান্সার কোষগুলো এই ওষুধকে তার কার্যকারিতা প্রয়োগের আগেই ধ্বংস করে দেয়। প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা যায়, মারণঘাতী ক্যান্সার চিকিৎসার ৯০ শতাংশই ব্যর্থতার মুখে পড়ে কেবল এই কারণে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ন্যানোটেকনোলোজির প্রফেসর ডিন হো ও তার গবেষণা দলের কাছে যাওয়া যাক। প্রাণরসায়নের এই প্রকৌশলী ন্যানোডায়মন্ডের গুণাগুণ নিয়ে বাজি ধরেন। কার্বনের এ কণার পরিমাপ হচ্ছে দুই থেকে আট ন্যানোমিটার। এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগ হচ্ছে এক ন্যানোমিটার। ন্যানোডায়মন্ডের গঠনপ্রকৃতির কারণে ক্যান্সারের কোষগুলো আক্রমণ করে তাদের পরাজিত করতে পারে না।
ন্যানোাডায়মন্ডের তল (পৃষ্ঠ) হচ্ছে এর আটটি। এর সঙ্গেই সংযুক্ত থেকে ওষুধটি দীর্ঘ সময় ধরে কোষের ভেতরে অবস্থান করে। কিভাবে? ন্যানোডায়মন্ডের বহুমুখী (বহুতল) বৈশিষ্ট্যের কারণে এর একটি তলে স্থির বৈদ্যুতিক চার্জ (স্থির বিদ্যুৎ) লেগে থাকে। একই সময় ওষুধ আরেকটি বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ তলে সংযুক্ত থাকে। এভাবে ন্যানোডায়মন্ড কোষের ভেতরে দীর্ঘসময় ধরে অবস্থান করে। ওষুধের ক্রিয়াও চলে দীর্ঘ সময় ধরে।
তাদের গবেষণা অনুসারে, অবিষাক্ত হওয়ার কারণে ন্যানোডায়মন্ডের অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া গেছে। এতে প্রদাহ হয় না, সস্তা ও সহজলভ্য।
প্রফেসর হোর গবেষণা দল ন্যানোডায়মন্ডের সঙ্গে যে ওষুধটি ব্যবহার করেছেন সেটা হচ্ছে ডোক্সোরুবিচিন। ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, ন্যানোডায়মন্ডের তলে ডোক্সোরুবিচিন সংযুক্ত করে চিকিৎসা করলে ইঁদুরগুলো সাধারণ চিকিৎসার চেয়ে ১০ গুণ বেশি আরোগ্য পাচ্ছে। ন্যানোডায়মন্ডের প্রভাবে টিউমার সংকুচিত হয়ে যায়, ইঁদুর বেশি দিন বাঁচে।
প্রাভদা অবলম্বনে রানা রায়হান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১১