টোকিও: ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে মঙ্গলবার তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার সব কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় পত্রিকা কিয়োদো নিউজের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালের দিকে বলা হয়েছিলো, চতুর্থ চুল্লি থেকে আগুনের শিখা দেখা গেছে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই জাপানের পরমাণু নিরাপত্তা সংস্থা এ খবর অস্বীকার করেছে। তবে পরে তৃতীয় চুল্লি থেকে সাদা ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
সরকারি টিভি চ্যানেল এনএইচকের একটি ফুটেজে দেখা যায়, ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র থেকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধোঁয়া অথবা বাষ্পের কু-লী উঠছে। তবে কাছাকাছি স্থাপনাগুলো থেকে কোনো আগুনের শিখা দেখা যায়নি।
জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইউকিয়ো এদানো বলছেন, ‘দুটি ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধোঁয়া উদগীরণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সম্ভবত পানির বাষ্পীভবনের ফলে সৃষ্ট জলীয়বাষ্পের মেঘ। এ কারণে তেজক্রিয়তা বেড়ে গেছে। ’
সোমবার পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অনেকটা কম থাকলেও মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে টোকিওতে এ মাত্রা এতো বেড়ে গেছে যে আন্তর্জাতিক সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, জাপান সরকারের প্রধান মুখপাত্র বলেছেন, ‘ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রের এ বিস্ফোরণ নিউকিয়ার শেকল বিক্রিয়ায় রূপান্তরিত হতে পারে এমন আশঙ্কা অমূলক। ’ তবে এ ব্যাপারে সম্ভাব্য সহযোগিতা পেতে মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইউকিয়ো এদানো বলেন, ‘তেজস্ক্রিয়তার মাত্র বেড়ে যাওয়ায় ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র থেকে সব কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রের চতুর্থ চুল্লিটির অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে আনুমানিক ২০ জন কর্মকর্তা কাজ করছিলেন। ’
তবে এদানো জানান, তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা আগের চেয়ে কমে গেছে। সোমবার আবহম-লে তেজষ্ক্রিয়তার মাত্রা ছিল ১০০০ মিলিসিভার্টস। মঙ্গলবার সকালে তা কমে ৬০০ থেকে ৮০০ এর মধ্যে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘তবে স্বাভাবিকের চেয়ে এ মাত্রা অনেক বেশি। এ অবস্থায় কর্মীরা পরমাণু কেন্দ্রে কাজ করতে পারবে না। কারণ এখনো তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকি রয়েই গেছে। ’
এদিকে, এর আগে কর্মকর্তারা ফুকুশিমার আশপাশে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরে যেতে অথবা ঘরে অবস্থান করতে বলেছিলেন। তবে মঙ্গলবার আবার তারা বলছেন, তারা ইভাকুয়েশন জোন আর সম্প্রসারিত করতে চান না।
পরমাণু বিশেষজ্ঞরা একমত যে ফুকুশিমা কেন্দ্রের চুল্লিগুলোর ধ্বংস ঠেকাতে প্রস্তাবিত সমাধানই সর্বশেষ প্রচেষ্টা। জাপানের এ বিপর্যয়কে বিশ্বের ভয়াবহতম শিল্পবিপর্যয় বলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১১