ঢাকা: এবার রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে তিনজন। এরা হলেন- এরিক বেটজিগ, স্টিফান ডব্লিউ. হেল এবং উইলিয়াম ই. মোয়েনার।
এদের মধ্যে দুইজন মার্কিন নাগরিক ও একজন জার্মান।
বুধবার দ্য রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস যৌথভাবে তিনজনকে রসায়নে এবার নোবেল পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এই তিনজনের মধ্যে একজন মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রের এরিক বেটজিগ হাওয়ার্ড হাগিস মেডিকেল ইনস্টিটিউট অ্যাসবার্ন জ্যানেলা রিসার্চ ক্যাম্পাসের গবেষক।
রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের আরেকজন হলেন স্টিফান ডব্লিউ হেল। তিনি জার্মানির হেইডেলবার্গের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি, গোটিনজেন ও জার্মান ক্যান্সার ইনস্টিটিউট রিসার্চ সেন্টারের গবেষক।
এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনির্ভাসিটি, স্ট্যানফোর্ডের গবেষক উইলিয়াম ই. মোয়েনার একইসঙ্গে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেলেন।
১৮৭৩ সালে অনুবীক্ষণবিদ আর্নেস্ট অ্যাবে জানিয়েছিলেন, প্রচলিত অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপির অতি তড়িৎচম্বুকীয় তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ০.২ মাইক্রোমিটারের বেশি রেজুলেশন হবে না।
কিন্তু গবেষক এরিক বেটজিগ, স্টিফান ডব্লিউ. হেল এবং উইলিয়াম ই. মোয়েনার তার এই মতবাদকে পাশ কাটিয়ে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বাড়াতে সক্ষম হন। তারা অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপিকে ন্যানোকপিতে পরিণত করেন।
আর এ কারণে সুইডিশ নোবেল কমিটি তিন গবেষককে রসায়নে যৌথভাবে নোবেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এই তিন গবেষকের গবেষণার সাফল্যের কারণে এখন থেকে গবেষকরা ব্যক্তিবিশেষের মস্তিষ্কের জীবন্ত কোষের ভেতরকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন, মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে কীভাবে সংকেত তৈরি হয়।
এ ছাড়া গবেষকরা পারকিনসন্স, আলঝেইমার ও হান্টিংটন রোগের ক্ষেত্রে প্রোটিন কী ধরনের ভূমিকা রাখে, তার ম্যাপও তৈরি করতে পারবেন। তারা আরো জানতে পারবেন, কারো নিষিক্ত ডিম্বাণুতে প্রোটিনের ভূমিকা এবং এই নিষিক্ত ডিম্বাণুকে কীভাবে বিভক্ত করে ভ্রুণ তৈরি করে এই প্রোটিন।
২০১৩ সালে রসায়নে নোবেলে পান অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক মার্টিন কারপ্লাস, ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক মাইকেল লেভিট ও ইসরাইলি বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক আরেই ওয়ারশেল।
মস্তিষ্কে কোষের গঠন নির্ধারণের পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য এ বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পান জন ও’কিফ, মে-ব্রিট মোসার ও অ্যাডভার্ড আই. মোসার।
গাঢ় নীল আলো ডায়োডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উজ্জ্বল সাদা আলোতে পরিণত হওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য এ বছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন ইসামু আকাশাকি, হিরোশি আমানো ও সুজি নাকামুরা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল ১৮৯৫ সালে তার উপার্জিত অর্থ প্রদানের জন্য একটি উইল করে যান।
এরপর ১৯০১ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার প্রদান করে আসছে নোবেল কমিটি। নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে শুধু শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। বাকি পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান করা হয়, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে।
গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট ছয়টি শাখায় নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। শাখাগুলো হলো- পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৪/আপডেটেড: ১৭১৭ ঘণ্টা