ঢাকা: শক্তি সঞ্চার করে ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ঘেষে ঘুরছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় রোববার দুপুরের আগেই আছড়ে পড়তে পারে অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যায়।
দফতরটি জানিয়েছে, দুপুরের আগেই অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তম ও উড়িষ্যার গোপালপুরের মাঝামাঝি এলাকায় আঘাত হানতে পারে হুদহুদ। এ সময় এর গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮০ কিলোমিটার।
হুদহুদের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, বিজয়নগরম ও শ্রীকাকুলাম জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং তৎপূর্ববর্তী ভারি বর্ষণের কারণে রাজ্যটিতে দুপুরের আগে ব্যাপক ভূমিধসের শঙ্কাও করছেন আবহাওয়াবিদরা। এছাড়া, ভারি বৃষ্টিপাতে প্লাবনের আশঙ্কা করা হচ্ছে এর আশপাশের জেলাগুলোতেও। অন্ধ্রপ্রেদেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের সরিয়ে নেওয়ার কাজও চলছে।
ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ভুবনেশ্বর ও বিশাখাপত্তম রুটের ট্রেন যাত্রা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় পাঁচ জেলার প্রায় তিন লাখ মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয় নিয়ে রোববার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদে’র পরোক্ষ প্রভাব পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশেও পড়বে।
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, হুদহুদের প্রভাবে দিঘা উপকূলে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলেদের গভীর সমুদ্রে না গিয়ে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
দুই মেদিনীপুরসহ রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
কলকাতা থেকে দক্ষিণ ভারতমুখী বিভিন্ন ট্রেনের গতিপথ নাগপুর দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ উপকূলে ৩ নং সতর্ক সংকেত
এদিকে হুদহুদের প্রভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় জেলা ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ইতোমধ্যে উপকূলীয় ও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
রোববার সকাল ৬টায় আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘হুদহুদ’ সামান্য উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে । ঘূর্ণিঝড়টি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১০ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬৫ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪০ কি.মি. দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতেও বলা হয় আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৪
** শক্তি বাড়ছে হুদহুদের, দুপুরেই আঘাত
** অন্ধ্র উপকূলের কাছাকাছি ‘হুদহুদ’
** উপকূল ও সমুদ্রে ৩ নম্বর সংকেত
** ভারতে লাখ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে
** সেন্টমাটিনে আটকা পড়েছেন ৩ শতাধিক পর্যটক
** ভারতে আঘাত হানবে ‘হুদহুদ’, বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত
** ‘হুদহুদ’র প্রভাবে ৩ ফুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা
** উপকূলে ৩ নম্বর সর্তকতা, উড়িষ্যায় আঘাত হানবে ‘হুদহুদ’
** প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে পরিণত হচ্ছে ‘হুদহুদ’
** মংলা বন্দর থেকে ৯৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হুদ হুদ
** রোববার ভারত উপকূল অতিক্রম করতে পারে হুদহুদ