ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘মানব পাচারকারীদের’ একটি নৌকা থেকে থাইল্যান্ডের উপকূলে ১৩৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে একই নৌকায় থাকা বাকি ১৭৬ জনের হদিস পেতে নির্ঘুম সময় পার করছেন কর্মকর্তারা।
থাই সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সম্প্রতি একটি দুর্গম এলাকা থেকে ১৩৪ জনকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ১৬ জন রোহিঙ্গাও ছিলেন। এদের কাছ থেকে জানা যায়, একই নৌকায় আরও ১৭৬ জন ছিলেন।
কিন্তু উদ্ধারকৃত ১৩৪ জনসহ ৩১০ জনকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, আর এখন ওই ১৭৬ জনই বা কোথায় এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের ভাষ্যমতে, পাচারকারীরা তাদের মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মাছধরা ট্রলার ও কারখানায় দাস হিসেবে বিক্রি করে দিতে পারে।
উদ্ধার হওয়া ১৩৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বর্তমানে বাংলাদেশি কর্মকর্তারা থাইল্যান্ড সফর করছেন।
সবার মতো এক যুবক ও এক বালক দাবি করেন, তাদের বাংলাদেশ থেকে ‘অপহরণ’ করে নিয়ে আসা হয়েছে। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের আটকের পর প্রথমে মাছধরা জাহাজে আটকে পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর এলাকা থেকে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল উপকূলের একটি দুর্গম দ্বীপের উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
এর আগে, থাইল্যান্ডের ফ্যাং এঙ্গা প্রদেশের তাকুয়া পা জেলায় ১৩০ জনকে উদ্ধারের ঘটনার পর মানবপাচারের অভিযোগ এনে দুই থাই নাগরিকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদেরও খুঁজছে।
স্থানীয় অনলাইন সংবাদ সংস্থা ফুকেটবান জানায়, একটি দ্বীপে পাচারকারীরা একদল লোককে নামিয়েছে বলে থাই কর্তৃপক্ষ জানতে পারার পর প্রায় অর্ধেক জিম্মি লোককে ওই দ্বীপ থেকে সাঁতরে স্থলভাগে ফিরে যেতে সমুদ্রে নামিয়ে দেয় পাচারকারীরা।
কিন্তু এই ১৩৪ জনকে স্থলভাগ থেকে উদ্ধার করা হলেও মনে করা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ পৌঁছানোর আগেই ওই ১৭৬ জনকে নিয়ে দ্বীপটি ছেড়ে গেছে পাচারকারীরা।
উদ্ধারকৃতরা ফুকেটবানকে জানান, তাদের ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে এবং ঠিক মতো খাবারও দেওয়া হয়নি।
তবে, বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা ফুকেটবানকে জানান, আমরা এ ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটতে দেখিনি। কারণ বাংলাদেশ থেকে সাধারণত পাচারের ঘটনা ঘটে না।
আবার রোহিঙ্গারা সাধারণত অক্টোবরের শুরু থেকে পরবর্তী পাঁচ মাস বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে শুরু করে বলে এই ১৭৬ জন ঠিক কারা-তা নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৪